রোগী দেখতে যাওয়ার পথে চিকিৎসককে জরিমানা, ইউএনও প্রত্যাহার

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : সাতকানিয়ায় রোগী দেখতে যাওয়ার পথে চিকিৎসককে ধরে জরিমানা করার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোববার এক আদেশে তাকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কেএম আল-আমীন এ আদেশ দেন।

এর আগে শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারে যাওয়ার পথে পৌরসভার কলেজ রোড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই চিকিৎসককে জরিমানা করেন ইউএনও মো. নজরুল ইসলাম। ওই সময় তিনি চিকিৎসককে জরিমানার সঙ্গে জেল দেয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক। যদিও বিষয়টি সেই সময় সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেন ইউএনও।

ডা. ফরহাদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, আমি পৌরসভার নাছির ফার্মেসি এবং মক্কা ফার্মেসিতে নিয়মিত চেম্বার করি। ঘটনার দিন আমি চেম্বার শেষ করে ফিরছিলাম। ওই সময় একজন ইমার্জেন্সি রোগী আসার বিষয়ে ফোন পেয়ে মাঝপথ থেকে আবার চেম্বারে যাচ্ছিলাম। তখন সাতকানিয়া পৌরসভার কলেজ রোডের মুখে ইউএনওর সঙ্গে দেখা হয়।

এ সময় ইউএনওর সঙ্গে থাকা লোকজন সিগন্যাল দিলে আমি মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার পরিচয় দেই।

ডাক্তার পরিচয় পাওয়ার পর ইউএনও কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনারা লকডাউন দেয়ার জন্য সুপারিশ করেন। আমরা লকডাউন সফল করতে পারি না বলে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। আর এখন আপনারা লকডাউন মানছেন না।

এরপর ইউএনওর সঙ্গে থাকা এক লোক আমার কাছ থেকে মোটরসাইকেলের চাবিটি নিয়ে নেন। এরপর ইউএনও বলেন, আপনাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, লকডাউনে বের হয়েছেন এজন্য। তখন আমি উনাকে ডাক্তারদের চেম্বারে যাওয়া আসায় বিধি-নিষেধ না থাকার বিষয়ে বলি। এতে আরও বেশি রাগান্বিত হয়ে যান ইউএনও।

এ সময় ইউএনও বলেন, আমি চাইলে আপনাকে জেলে দিতে পারি। তা করলাম না, এক হাজার টাকা জরিমানা দেন।

ডাক্তার ফরহাদ কবির আরও জানান, অনেক লোকের সামনে তিনি ডাক্তারদের সম্পর্কে অনেক কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। একপর্যায়ে মামলা লিখে আমার হাতে দিয়ে এক হাজার টাকা দিতে বলেন। তখন আমি টাকা দিয়ে দেই।

এরপর ইউএনও বলেন, সাংবাদিকরা ছবি উঠান, ডাক্তারকে যে জরিমানা করছি এটা পত্রিকায় দিতে হবে। পরে অনেকে মোবাইলে আমার ছবি তুলেছেন। জীবনে আমি কোনোদিন এ ধরনের অপমান বোধ করিনি। আমি বুঝতে পারছি না একজন ইউএনও কীভাবে এমন খারাপ আচরণ করতে পারেন?

ঘটনার বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, উনি যে ডাক্তার সেটাতো আমি বুঝতে পারিনি। উনার সঙ্গে আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং হেলমেট ছিল না। তিনি যে অন্যায় করেছেন সেটা নিজে বুঝতে পেরেছেন। তিনি নিজেই বলেছেন, আমার অন্যায় হয়েছে। আমাকে শাস্তি দেন। পরে আমি এক হাজার টাকা জরিমানা করেছি। আইন সবার জন্য সমান। সরকার আইন করেছে আমরা বাস্তবায়ন করছি। তিনি চাইলে আপিল করতে পারেন। মূলত সন্ধ্যা ৭টার পর পাওয়াতে, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট না থাকাতেই জরিমানা করা হয়েছে।

সিটি নিউজ / এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.