চমেকের ১২৬ চিকিৎসককে হঠাৎ বদলি

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ১২৬ জন চিকিৎসককে একযোগে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এ নির্দেশনা জারি করেছে। করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় আদেশটি জারির পর চিকিৎসকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একযোগে এত চিকিৎসকের বদলিতে চমেক হাসপাতালের বিদ্যমান চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীনের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে, ‘কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবিলা এবং জনসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের এই কর্মকর্তাদের সংযুক্তিতে পদায়ন করার কথা বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বদলি হওয়া চিকিৎসকদের বুধবারের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন পদায়িত চিকিৎসকরা হাসপাতালগুলোর কোভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালন করবেন।

চমেক সূত্র জানায়, চমেক হাসপাতালে বর্তমানে কোভিড ওয়ার্ডে লাল ও হলুদ জোন মিলিয়ে ৩০০ বেড রয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৩১৩ বেডের বিপরীতে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসাস্থল এ হাসপাতাল। এখান থেকে একযোগে ১২৬ চিকিৎসকের বদলিতে হাসপাতালটিতে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সচিব মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে ওনাকে জানিয়েছি। এখানে কোভিড ওয়ার্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের দুই হাজারের অধিক রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকেন। কিন্তু বদলির বিপরীতে কোনো চিকিৎসককে এখানে পদায়ন করা হয়নি। এমনকি কোভিড ওয়ার্ডের চিকিৎসকও বদলি করা হয়েছে। ফলে কোভিড ও ননকোভিড সব ওয়ার্ডেই চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে।’

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চমেক হাসপাতাল থেকে ফেনী জেলা হাসপাতাল ও ফেনী দাগনভূঁঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ২৪ জন, খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে ১৮ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৬০ জন, ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডিতে ১৬ জন ও ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ৮ জন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩০ জন চিকিৎসককে একই হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে বদলি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বিভাগীয় সমন্বয়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে কোভিড ও নন কোভিডের চিকিৎসা নিতে সারা বিভাগ থেকে রোগীরা আসেন। এখান থেকে চিকিৎসক বদলি করে এখানকার বিদ্যমান চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার শামিল। এছাড়া চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও বিআইটিআইডি বিদ্যমান চিকিৎসক দিয়ে ভালোভাবে চলছে। সেখানে অতিরিক্ত চিকিৎসক দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। এছাড়া সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলমান লকডাউনের মধ্যে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকদের নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়াও কঠিন হবে।

সিটি নিউজ/এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.