ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলেই বিলম্ব না করে পরীক্ষা করার অনুরোধ

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : করোনাকালে নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। এ অবস্থায় ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে বিলম্ব না করে সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।

রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার এন্টিজেন কিটের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে এ পরীক্ষাটি বিনামূল্যে করার সুযোগ রয়েছে।

ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে জনগণকে অবহেলা না করার আহ্বান জানিয়েছেন জানান তিনি।

এদিকে, এদিন দুপুরে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন সেন্টারে নির্মাণাধীন ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, রাজধানীর বিশেষায়িত হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেই ডেঙ্গুর হানায় পরিস্থিতি বেসামাল হচ্ছে। কোভিড রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সলিমুল্লাহ, আহসানুল্লাহ মেডিকেলসহ রাজধানীর নির্দিষ্ট বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেওয়া হবে।

শনিবার (২৪ জুলাই) দেশে ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। যা একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০৪ জন, যাদের সবাই রাজধানীর। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ১ হাজার ২০২ জন।

আর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১ হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে বর্তমানে সারা দেশে ভর্তি রোগী ৪২২ জন। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪১৯ জন, আর অন্য বিভাগে ৩ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া ১০৪ জন রোগীর মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৩১ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭৩ জন ভর্তি রয়েছেন। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালগুলোর মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ২১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে পাঁচজন ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৯ জন।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে মোট ১ হাজার ৫৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ১৪৯ জন।

প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে আবাসস্থল নিয়মিত পরিষ্কার রাখার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বলেছে, এডিস মশা যেহেতু অভিজাত এলাকায়, বড় বড়, সুন্দর সুন্দর দালান কোঠায় বসবাস করে ও সেখানে থাকা স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে তাই এসব আবাসস্থল নিয়মিত পরিষ্কার রাখা এ রোগের বিস্তার রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ।

আর মশার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরের দরজা ও জানালায় মশারির নেট লাগানোর ওপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রয়োজনে দিনের বেলায় ঘুমালে অবশ্যই মশারি টাঙ্গিয়ে বা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে বলেছে।

সিটি নিউজ/এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.