জমিয়াতুল ফালাহ আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের ৭ম দিন 

0

মানবাধিকার পদদলিত ও অন্যায় অবিচার প্রতিষ্ঠা করায়
ইয়াজিদ আজ তীব্র নিন্দা ও ধিক্কারের পাত্র – বক্তারা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি  :    জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে ৩০তম ১০দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল (বুধবার) ৭ম দিনে বক্তারা বলেছেন, কারবালার যুদ্ধ ছিল অন্যায় অবিচার ও ইয়াজিদি স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইনের (রা.) নেতৃত্বে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। যে সংগ্রাম-সংঘাতে সেদিন আদর্শিকভাবে হেরে গিয়েছিল পাপিষ্ট ইয়াজিদ। জনগণ ছিল ইমাম হোসাইনের (রা.) পক্ষে এবং সত্য ও ন্যায় ভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি আস্থাশীল।

বক্তারা বলেন, জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাতন্ত্র কায়েম, মানবাধিকার দলন, মদ-সুদ-জুয়া ব্যভিচারকে বৈধ ঘোষণা ইত্যাদি দুষ্কর্মের জন্য ইয়াজিদ যুগে যুগে ধিক্কারের পাত্র হচ্ছে। ইসলামের নামে প্রথম অন্যায় অবিচারের সূচনাকারী হিসেবে ইয়াজিদের নাম তীব্র নিন্দার সাথে উচ্চারিত হয়ে আসছে। ইমাম হোসাইনের (রা.) নেতৃত্বে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পৃথিবীর ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে গতকাল বুধবার ৭ম দিনের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন আলহাজ্ব ডা. সৈয়দ মুহাম্মদ দিদারুল হক মাইজভা-ারী (ম.জি.আ)। প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল নোমান। আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) শান মর্যাদা বিষয়ে স্বাগত বক্তব্যে জমিয়াতুল ফালাহর খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী বলেন, প্রিয় নবী (দ.) বলেছেন হযরত ইমাম হোসাইন ও ইমাম হাসান আমার।

আমি তারা দুজনের সুখে সুখি, দুঃখে দুঃখি। আহলে বায়তে রাসূলকে (দ.) যারা অন্তর দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসবে তারাই হবেন জান্নাতি। আর আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি যাদের অন্তরে শ্রদ্ধা-ভক্তি-তাজিম নেই তাদের চেয়ে বড় বদ নসিব লোক আর কেউ হতে পারে না। এটাই হচ্ছে কুরআন-হাদিসের ফয়সালা।
প্রধান অতিথি আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, কারবালার ঘটনা থেকে আমরা দ্বীন ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার প্রেরণা খুঁজে পাই। তাঁরাই ইসলামের শাশ্বত নিশানা বহন করে চলেছেন। ইসলামের প্রকৃত অনুশাসন মেনে চললে দেশ ও সমাজে অশান্তি-অরাজকতা এবং মানুষে মানুষে বিভেদ-হানাহানি থাকতে পারে না। সভাপতির বক্তব্যে মাইজভান্ডার দরবারের সাজ্জাদানশীন আলহাজ্ব ডা. সৈয়দ মুহাম্মদ দিদারুল হক মাইজভান্ডারী (ম.জি.আ.) বলেন, জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা এ মাহফিল ৩০ বছর ধরে আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবেও বেশ সমাদৃত। তিনি এ জন্যে অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী (ম.জি.আ) প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন ভারতের আল্লামা খতীবে লাছানী আকবর এহসানী (ম.জি.আ.)।

তিনি বলেন, হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) মুসলমানদের ঈমান আক্বিদার উজ্জীবনের প্রতীক। তাই আহলে বায়তের স্মরন আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। মাহফিলে অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব মুহাম্মদ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট ও সমাজসেবক ডা. মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ক্লিপটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক সৈয়দ শিহাব উদ্দিন আলম। আলোচক হিসেবে ছিলেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার তাফসীর বিভাগের অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দিন।
মাহফিলে কোরান মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী (মিশর)। হামদ ও নাতে রাসূল (স.) পরিবেশন করেন পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক নাত খাঁ হাসান বিন খুরশিদ। মাহফিল সঞ্চালনায় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা, সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুল লতিফ, আলহাজ্ব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, আলহাজ্ব খোরশেদুর রহমান, আলহাজ্ব আবদুল হাই মাসুম, ব্যাংকার হাফেজ মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ, আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবুল মনসুর সিকদার, আলহাজ্ব মুহাম্মদ মাহাবুবুল আলম, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যাপক কাউসার হামিদ, আলহাজ্ব জাফর আহমদ সওদাগর, আলহাজ্ব সিরাজুল মুস্তাফা, আলহাজ্ব দিলশাদ আহমেদ, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমদ, মওলানা হাফেজ আহমদুল হক, হাফেজ মাওলানা সৈয়দ জালালুদ্দিন, মাওলানা জিয়াউল হক, হাজী আবুল কালাম, মুহাম্মদ রেজাউল করিম রেজু, হাজী মনির আহমদ, এস. এম. ওসমান গণি, আলহাজ্ব এ এম মঈন উদ্দীন চৌধুরী হালিম, মাহফুজুর রহমান, সৈয়দ শরফুদ্দীন, তৌহিদুল কাদের প্রমুখ।

ওয়েব সাইটে প্রতিদিনের মাহফিল সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে। সালাত-সালাম পরিবেশন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম মিল্লাতের সমৃদ্ধির জন্য আল্লাহর দরবারে মুনাজাত পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ জালালুদ্দিন আলকাদেরী (ম.জি.আ.)।
মহিলাদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা ঃ ৬ মহররম মঙ্গলবার থেকে ১০ মহর্রম শনিবার পর্যন্ত ৫ দিন পর্যন্ত বড় প্রজেক্টরে মহিলাদের তকরির শোনার জন্য মসজিদ কমপ্লেক্সের নিচ তলায় পর্দাসহকারে আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে বিপুল সংখ্যক দ্বীনদার মহিলা অংশগ্রহণ করেন। ১০দিনব্যাপী এ মাহফিল চলবে ২৪ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত ।

প্রতিদিনের মাহফিলে সবাইকে অংশগ্রহণের জন্য জমিয়াতুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদের খতিব, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস এর সদস্য অধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন আলকাদেরী (মজিআ) অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.