সিটি নিউজ ডেস্ক : খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীয় সভাপতি তপন জ্যোতি চাকমাসহ পাঁচ হত্যাকাণ্ডের আসামি বিরাজ মনি চাকমাকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে। বিরাজ মনি চাকমা ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের ক্যাডার বলে জানা গেছে।
সোমবার (০৯ আগস্ট) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহালছড়ি জোনের সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল খাগড়াছড়ির দূরছড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে ধরে। এরপর তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে একটি চাইনিজ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি, চাঁদা সংগ্রহের রশিদ বই, মোবাইল ও ব্যক্তিগত ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মহালছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সেনা সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৪ মে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা। তার দাহক্রিয়ায় যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মাসহ পাঁচজন নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় অস্ত্রসহ লালন চাকমা (৩৮) নামে প্রসীত বিকাশ খীসা সমর্থিত ইউপিডিএফের চিফ টোল কালেক্টরকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। গত শুক্রবার (৬ আগস্ট) বিকেলের দিকে মাটিরাঙ্গার দুর্গম সাপমারা এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা বাজার থেকে চাইল্যা প্রু মারমা (২৩) ও চা থই মারমা (২৯) নামে ইউপিডিএফের দুই টোল কালেক্টরকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান টোল কালেক্টর লালন চাকমার নামসহ আরও বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
লালন চাকমা সাপমারা থেকে পানছড়ি যাবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাটিরাঙ্গা জোনের আভিযানিক দল সাপমারা এলাকাতে অবস্থান নেয়। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে যাওয়ার পথে লালন চাকমাকে সাপমারা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে মরক্কোর তৈরি একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া চাঁদা আদায়ের রশিদ বই ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
আটককৃত সন্ত্রাসী লালন চাকমাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, লালন চাকমা দীর্ঘদিন ধরে মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা এলাকায় চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং পাহাড়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় মাটিরাঙ্গা সেনা জোন।
সিটি নিউজ/এসআরএস