আলোচিত এ সাহেব মূলত ব্যবসায়ী। মালিকানা আছে ইন্ডিয়া সিমেন্ট লিমিটেডে। আইসিসির চেয়ারম্যান পদে এসেছেন বিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট থাকা সূত্রে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে বর্তমানে বিসিসিআইয়ে তার কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেই।
তবে ব্যবসায়ী বা ক্রীড়াবিদ হিসেবে নয়, শ্রীনিবাসনের নাম ঘুরেফিরে এসেছে নানা কেলেঙ্কারির সঙ্গে। তামিলনাড়ূতে জন্ম নেওয়া শ্রীনিবাসন চেন্নাইয়ে পড়ালেখা করেছেন প্রযুক্তি নিয়ে। পরে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর ইলিনয় ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে।
তিনি তামিলনাড়ূ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তামিলনাড়ূ গলফ ফেডারেশনেরও প্রধান হিসেবে আছেন। একসময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন সর্বভারতীয় দাবা ফেডারেশনেরও।
১৯৯৮ সাল থেকে ছিলেন তামিলনাড়ূ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। তার ওই সময়কার প্রেসিডেন্ট এসি মুথাইয়া পরে বিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট হয়ে শ্রীনিবাসনকেও নিয়ে আসেন। ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সেক্রেটারি হিসেবে। এ পদে ছিলেন ২০১১ পর্যন্ত।
২০০৮ সালে আইপিএল চালু হলে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া সিমেন্ট লিমিটেড চেন্নাই সুপার কিংসের ফ্র্যাঞ্চাইজি কেনে। ওই সময় বিসিসিআইর আইনে ছিল, বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো বাণিজ্যিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িত থাকতে পারবেন না। ব্যবসায়ী কিন্তু বোর্ড কর্তা এমন ব্যক্তিদের সুবিধা দিতে ওই বছর বিধানটিতে সংশোধনী আনা হয়।
সে সুবাদে চেন্নাই সুপার কিংসের মালিকানা নেন শ্রীনিবাসন। তবে তার বিরুদ্ধে ভারতের আদালতে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’-এর অভিযোগ আনা হয়।
চেন্নাই দলটির প্রধানের দায়িত্ব দেন মেয়েজামাই গুরুনাথ মায়াপ্পনকে। এখন পর্যন্ত আইপিএলে সবচেয়ে সফল দল ধোনির নেতৃত্ব দেওয়া চেন্নাই সুপার কিংসই। পরপর দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়াও প্রতিবারই দলটি সেমিফাইনালে খেলেছে। ২০১০-১১ মৌসুমে নির্বাচিত হয় সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবেও।
এরই মধ্যে ২০১১ সালে তৎকালীন বিসিসিআই সভাপতি শশাঙ্ক মনোহরের স্থলে দায়িত্ব নেন শ্রীনিবাসন। ২০১৩ সালের মে মাসে তাকে বিসিসিআইয়ে নিয়ে আসা সাবেক সভাপতি এসি মুথাইয়া টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআইয়ে আনা ছিল বিরাট ভুল।
২০১৩ সালে আইপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে তার জামাতা এবং চেন্নাই দলের প্রধান গুরুনাথ মায়াপ্পনকে গ্রেফতার করে মুম্বাই পুলিশ।
ভারতের উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি মুকুল মাদুগালের নেতৃত্বাধীন কমিটি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেওয়া রিপোর্টে জুয়াড়িদের সঙ্গে তাদের লেনদেনের সত্যতা পায়। ফাঁস হয় জুয়াড়িদের সঙ্গে তার কথোপকথন।
২০১৪ সালের মার্চে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআইর দায়িত্ব থেকে সরে যেতে নির্দেশ দেন। বহিষ্কৃত অবস্থাতেই তিনি জুন মাসে নির্বাচিত হন আইসিসির চেয়ারম্যান।
সূত্র: সমকাল