সবখানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার

0

সিটিনিউজবিডি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে রবিবার সকাল ১০টায় প্রতিবাদী এক মানববন্ধনে এ সব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।
‘শুধু ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, দেশের সবখানেই নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কিন্তু তারা মুখ বুজে এ সব হয়রানি সহ্য করে যাচ্ছেন। এখন সময় এসেছে, সেই নিপীড়কদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার।’
ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত সুলতানা বৃষ্টির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানির কুৎসিত অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রশাসন ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাশা আল আইরিন খান বলেন, ‘আমরা শুধু ঢাকার যৌন হয়রানির কথাই জানি। কিন্তু পয়লা বৈশাখে এ ক্যাম্পাসেই দেখেছি স্বামীর সামনে স্ত্রীকে যৌন হয়রানির শিকার হতে। শনিবার সন্ধ্যায় পথ চলার সময় আমার দিকে পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে। গালি দিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত করা হয়েছে। এগুলো হয়তো এখানে কম ঘটছে তাই আমরা জানি না। কিন্তু প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটছে।’

একই বিভাগের রেহেনুমা শারমিন সমাপ্তি নিজের অভিজ্ঞতার কথায় বলেন, ‘একদিন আমি বিশ্বদ্যিালয়ের কাজলা গেট থেকে অটোরিকশায় করে বাজারে যাচ্ছিলাম। সে সময় একটা ছেলে আমার দিকে গোটা পথ এমনভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমায় গিলে ফেলবে। শুধু সে সময় নয়, প্রতিটি সময় আমরা এভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছি।’

কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আফিফা চেরি বলেন, ‘যৌন হয়রানি বন্ধে বোরখা কোনো সমাধান নয়। যারা বোরকা পরেন তারাও নানাভাবে আরও বেশি যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আমরা দীর্ঘ দিন যৌন হয়রানি সহ্য করেছি, আর না। সব মেয়ে এখন এক হয়ে সেই নিপীড়কদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাবতে কষ্ট হচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও নারীরা এভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যদি দেশে কখনো কোনো পুরুষ প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে নারীদের কী অবস্থা হবে, সেটা কল্পনাও করা যায় না। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচার চাইতে থাকব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ততদিন পর্যন্ত খোলা চিঠি দেব যতদিন পর্যন্ত এ নরপশুদের বিচার না হবে।’

ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মৌমিতা বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রত্যেকটা মেয়েই রাস্তায়, বাসে এমন কী বাড়িতেও কোনো না কোনো ভাবে প্রতি মুহূর্তে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যারা বোরকা পরছেন তারাও হচ্ছেন। আমরা আর পোশাকের দোহাই শুনতে চাই না। যারা যৌন হয়রানি করছেন তারা সাবধান হন। আপনাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে।’

মানববন্ধন শেষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলার মাঠে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ হিসেবে তারা সাবাস বাংলার মূর্তির চোখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.