৮ বছর পর সন্দ্বীপের আলোচিত হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

0

সিটিনিউজবিডি : বিচার শুরুর পর ১৭ বছর পেরিয়ে যাওয়া সন্দ্বীপের সেই হত্যা মামলায় আট বছর পর একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সম্প্রতি উচ্চ আদালত চট্টগ্রামের এই মামলাটির দেরির কারণ জানতে চাইলে তা আলোচনায় উঠে আসে।

সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার সাক্ষী ডা. ফখরুল করিম।

১৯৯৩ সালের ৪ অগাস্ট চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে আক্কাস উদ্দিনকে (৩০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

সেই সময় সন্দ্বীপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন ফখরুল করিম। বর্তমানে তিনি সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সহকারী পিপি অজয় বোস বলেন, ডা. ফখরুল করিম ময়নাতদন্তের সময় নিহতের শরীরে যেসব আঘাত দেখতে পেয়েছেন সে বিষয়ে সাক্ষ্য বলেছেন।

সাক্ষ্যে চিকিৎসক বলেন- নিহতের মাথার পেছনে, বুকের বা পাশে, তলপেটে, দু’হাতে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মস্তিকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছিল। এটি একটি হত্যাকাণ্ড।

সহকারী পিপি অজয় বোস বলেন, প্রায় আট বছর পর সপ্তম সাক্ষী হিসেবে ডা. ফখরুল করিম সাক্ষ্য দিলেন।

এ মামলায় মোট ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়। তবে পুলিশ সম্প্রতি স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্রত্যায়নসহ প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, জাফর, শামীম ও মান্নান নামের তিন স্বাক্ষীর বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ায় তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।”

আইনজীবী অজয় বোস বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সন্দ্বীপ থানার সেসময়ের এসআই এ এইচ এম মান্নানকে পাওয়া যায়নি।

সাক্ষ্য দিতে তাকে হাজির করতে আবারও সমন জারি করা হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। আইওকে পাওয়া না গেলে আর অন্য কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হবে না।

তিন মাসের মধ্যেই মামলাটি শেষ করতে উচ্চ আদালত নির্দেশনা দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই বিচার শেষ হবে বলে আশা করছেন এপিপি অজয়।

২০০৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সর্বশেষ সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

গত ৮ অগাস্ট হাই কোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চ ১৭ বছরেও কেন মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি, তা জানতে চান।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানায় ২৩ বছর আগে হওয়া ওই মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিকালে হাই কোর্টের এ আদেশ আসে।

মামলার নথিতে দেখা যায়, ১৯৯৩ সালের ৪ অগাস্ট চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নে আক্কাস উদ্দিনকে (৩০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার পর নিহত আক্কাসের বাবা আবুল খায়ের বাদী হয়ে ১৯৯৩ সালের ৭ অগাস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে সন্দ্বীপ থানায় হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত শেষে এসআই সন্দ্বীপ থানার সেসময়ের এসআই মান্নান ১৯৯৩ সালের ১৯ অক্টোবর আটজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন।

আসামিরা হলেন- চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, দফাদার শাহজাহান হক, চৌকিদার আবুল কাসেম, চৌকিদার ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, চৌকিদার মো. সিদ্দিক, মেম্বার আশ্রাফ উদ্দিন, মেম্বার মোমিনুল হক ফেরদৌস ও চৌকিদার সাফিউল হক।

এদের মধ্যে প্রথম তিনজন মারা গেছেন। আশ্রাফ উদ্দিন ও মোমিনুল হক ফেরদৌস জামিনে আছেন। মো. সিদ্দিক ও সাফিউল হক পলাতক।

১৯৯৯ সালে এ মামলার বিচার শুরুর পর সাক্ষ্য শুরু হয় ওই বছর ১০ অগাস্ট।

চলতি বছরের ১১ মে চৌকিদার ফয়েজ গ্রেপ্তার হন। নিম্ন আদালতে তিনি জামিনের আবেদন জানালে তা নাকচ হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাই কোর্টে আবেদন করলে ৮ অগাস্টে তা শুনানির জন্য ওঠে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.