মনোযোগের অভাব ও অতিচঞ্চলতার রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
সিটিনিউজ ডেস্ক ঃঃ মনোযোগের অভাব ও অতিচঞ্চলতার রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ADHD এর পূর্ণরুপ হল Attention Deficit Hyperactivity Disorder । এটি অতি সাধারন একটি রোগ যা মূলত শিশুদের হয় কিন্তু যেকোনো বয়সের মানুষেরই এ রোগ হতে পারে ।নামটির সরল অর্থ করলে দাঁড়ায় কিছুটা এরকম, “মনোযোগের অভাব ও অতিচঞ্চলতার রোগ”। অর্থাৎ এ রোগ হলে ব্যাক্তি বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন অনুযায়ী মনোযোগ দিতে পারেন না এবং ব্যক্তির চঞ্চলতা অন্যদের থেকে একটু বেশি হয়। যেমন এমন অনেক মানুষ আছে যারা ক্লাসে বা পড়ার সময় কিছুতেই মনোযোগ দিতে পারেন না। আবার এমন কিছু মানুষ আছে যারা কোনো কাজ না করে চুপ করে বসে থাকতেই পারেন না। বলা যেতে পারে খুব সম্ভবত এই রোগের কারনেই তারা এরকম।
আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা এই রোগে আক্রান্ত। কিন্তু এটাকে কোনো রোগই মনে না করে সারাজীবন ধরে বয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ সঠিক চিকিৎসায় খুব সহজেই এ রোগকে দমিয়ে রাখা যায়। আপনার এ রোগ আছে কিনা তা জানতে এর লক্ষণগুলো জানতে হবে। শিশুদের প্রধানত স্কুলে ভর্তির পরই এ রোগের লক্ষণগুলো চোখে পড়ে । মেয়েদের চেয়ে ছেলেরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। বয়ষ্ক মানুষও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় ঃ
১) খুব সহজেই মনোযোগ হারিয়ে ফেলে।
২) নির্দেশ অনুসারে কাজ করে না।
৩) কোনো কাজ আরম্ভ করলে তা শেষ করতে পারে না।
৪) অন্যের কথা মনোযোগ সহকারে শোনে না।
৫) অমনোযোগিতার ফলে বিভিন্ন ভুল করে
৬) বিভিন্ন জিনিস হারিয়ে ফেলে।
৭) রুটিন মেনে চলতে পারেনা।
৮) দিবাস্বপ্নও দেখে থাকে!
৯) এক স্থানে চুপ করে বসে থাকতে পারে না।
১০) কোথাও বসিয়ে রাখলে নানা ভাবে নড়াচড়া করতে থাকে।
১১) এমন মনে হয় যেন সে সর্বদা অনেক তাড়ায় আছে!
১২) লম্বা ওয়েটিং লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।
১৩) বেশি কথা বলে, আর অন্যের কথার মাঝে বাধা দেয়।
বয়ষ্ক মানুষদের ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় ঃ
১) প্রায়ই বিভিন্ন কাজে দেরি করে ফেলে, যেমন অফিসে যেতে দেরি করে।
২) প্রায়ই বিভিন্ন জিনিস ভুলে যায়।
৩) নিজের সামর্থ্যকে অবমূল্যায়ন করে।
৪) রাগের সময় নিজেকে সামলাতে সমস্যা হয়।
৫) নিয়মতান্ত্রিক ভাবে থাকতে পারে না।
৬) রুটিন ফলো করতে পারে না।
৭) পড়ার সময় মনোযোগ দিতে পারে না।
৮) কোনো কাজ (যেমন:- প্রোজেক্ট) শুরু করলে তা শেষ করতে পারে না।
৯) সহজেই হতাশ হয়ে যায়।
১০) কখনো দুঃখি আবার পরক্ষণেই খুশি এরকম ভাবে মুড চেঞ্জ হয়।
১১) ভালোভাবে চিন্তা না করেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে।
প্রতিকার ঃ
মেডিসিন অথবা থেরাপি দিয়ে এ রোগ নির্মূল করা সম্ভব। এ রোগের জন্য তৈরিকৃত মেডিসিনগুলো খুবই কার্যকরী! আমেরিকা, কানাডার মত উন্নত দেশের শিক্ষার্থীরা এ রোগের অনেক ওষুধ “স্মার্ট ড্রাগ“বা “স্টাডি ড্রাগ” হিসেবে গ্রহণ করে। এটি গ্রহণ করলে ভালো মানুষের মনোযোগও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায় এবং এতে স্টাডি পূর্বের তুলনায় অনেক ভালো হয়। তবে তা অবশ্যই স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর এবং এতে প্রবল নেশার উদ্রেক হতে পারে।
কথিত আছে যারা ADHD আক্রান্ত তারা অন্যদের চেয়ে বেশি ক্রিয়েটিভ হয় এবং তাদের আইকিউ স্কোরও অন্যদের চেয়ে বেশি। এরা তাদের পছন্দের বিষয়ে পরিপূর্ণ মনোযোগ দেয় যা সাধারণত সাধারন মানুষ দিতে পারে না। এর ফলে সে বিষয়টিতে তারা অনেক ভালো করে।
ADHD আক্রান্ত ক’জন বিখ্যাত ব্যক্তি হলেন – বিল গেটস, এমা ওয়াটসন, লেডি গাগা, আলবার্ট আইন্সটাইন।