সাতকানিয়ায় অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

0

চট্টগ্রাম অফিস   :    সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোল‍া গ্রামে সোমবার (১৭ আগস্ট) রাতে মাহফুজুলের বাড়ির পাশে ডোবায় তল্লাশি চালায় সিআইডি।  এসময় পলিথিনে মুড়িয়ে ডোবায় পানির নিচে রাখা একটি বিদেশি একে-২২, ৬টি গুলি ও ২টি ম্যাগজিন, তিনটি এলজি, তিন রাউন্ড ৭.৬৫ বোরের গুলি এবং সাত রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।  সাতকানিয়া উপজেলার যুবলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুলকে  সিআইডি গ্রেফতার করেছে ।

চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার তদন্তে গিয়ে ডোবার মধ্যে মাহফুজুল হক নামে এক যুবলীগ নেতার অস্ত্রভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।  একইসঙ্গে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হাফেজ আহমেদ (৫৫) হত্যা পরিকল্পনার রহস্যও উদঘাটন করেছে সিআইডি।

মাহফুজুল সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ইউনিট যুবলীগের সহ-সভাপতি।  তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ ড.আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভির অনুসারী বলে নিজেকে দাবি করেছেন।

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রাত ৩টায় এওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাফেজ আহমদের বাড়িতে হামলা চালায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।  এতে ওই নেতার ছেলের শ্বাশুড়ি (বেয়াইন) আনোয়ারা বেগম (৪২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।  এ ঘটনায় হাফেজ আহমেদ বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  মামলা নম্বর ১০ (০১) ২০১৫।

ওই মামলার দু’জন আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাহফুজুলকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক মোহাম্মদ ওবায়দুল হক  বলেন, মাহফুজুলকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ডোবার নিচে অস্ত্র রাখার কথা আমাদের বলেন।  তাকে নিয়ে অভিযানে গিয়ে আমরা অস্ত্রগুলো উদ্ধার করেছি।

হত্যাকান্ডের বিষয়ে ওবায়দুল হক জানান, হাফেজ আহমদের প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ এলাকায় সক্রিয় আছে। তবে ইউপি সদস্য মাহফুজুল হাফেজ আহমদের অনুসারী হিসেবেই রাজনীতি করেন।

তাহলে হাফেজ আহমদের বাড়িতে হামলায় মাহফুজুল কিভাবে জড়িত জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, হাফেজকে খুন করে প্রতিপক্ষ নজরুল ইসলাম মানিককে ‍ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল তারা।

হাফেজ আহমদ যে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন তাতে প্রধান আসামি ছিলেন নজরুল ইসলাম মানিক। একইসঙ্গে আরও আটজনের নাম উল্লেখ এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ২৮ জানুয়ারি পুলিশ এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামে নজরুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বন্দুকের ৩২টি গুলি, ২৮ গুলির খোসা, গুলি রাখার বেল্ট, বন্দুকের কাভার ও একটি এয়ারগান উদ্ধার করেছিল।

এ বিষয়ে মাহফুজুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি নজরুল ইসলাম মানিক তাদের প্রতিপক্ষ বলে স্বীকার করেন। তবে হত্যাকান্ডের বিষয়ে কিছুই বলেননি।

মাহফুজুল বলেন, নজরুল আগে বিদেশে থাকত। কোনদিন আওয়ামী লীগ করেনি। এখন বিদেশ থেকে এসে আওয়ামী লীগ করছে। আমরা এমপি সাহেবের সঙ্গে আছি। নজরুল আমাদের বিরোধী।

সিআইডি পরিদর্শক ওবায়দুল হক বলেন, হাফেজ আহমদ যে কক্ষে ঘুমাতেন সেই কক্ষ লক্ষ্য করেই গুলি ছোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু সেদিন ওই কক্ষে আনোয়ারা বেগম ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে ‍মারা গেছেন। বেঁচে গেছেন হাফেজ।

অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান পরিদর্শক ওবায়দুল।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.