আজ নায়ক রাজের জন্মদিন

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ বাংলা চলচিত্র জগতের মুকুহীন সম্রাট, বাংলার নায়ক রাজ রাজ্জাক। সেলুলয়েডের ফিতায় তাঁর অসংখ্য চরিত্র অমর হয়ে আছে দর্শকের হৃদয়ে। আজ ২৩ জানুয়ারি। বাংলা সিনেমার এ কিংবদন্তী অভিনেতার ৭৬তম জন্মদিন।

জন্মদিন উপলক্ষ্যে যোহরের পর গুলশান আজাদ মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, এতিম ও গরীবদের দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এরপর বিকেলে গুলশান আজাদ মসজিদেই নায়ক রাজের জন্য দোয়া করা হবে। এগুলো তার পরিবার থেকে আয়োজন করা হবে।

অন্যদিকে এফডিসিতেও এই দিনকে ঘিরে বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে। আজ সকালে নায়ক রাজের কবরস্থানে শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর এফডিসিতে ফিরে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ের সামনে নায়ক রাজের স্মৃতিফলকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হবে। এফডিসিতে বিকেলে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রাজ্জাক-যার পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে রাজ্জাক তার অভিনয় জীবনের শুরু করেন। বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন।

 বাংলা সিনেমার মুকুটহীন সম্রাট নায়ক রাজ
                                                      বাংলা সিনেমার মুকুটহীন সম্রাট নায়ক রাজ

সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছা নিয়ে রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে এসে শিলালিপি ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে ১৯৬৪ সালে কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন।

তৎকালীন প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় এসেও রাজ্জাক চলচ্চিত্রের নায়ক হওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন-তবে প্রথমেই এতে সফলতা না পেয়ে সিনেমার একজন সহকারি পরিচালক হিসেবে ‘উজালা’ ছবিতে পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারি হিসেবে কাজ শুরু করেন।

’৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত হাসির ছবি ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাক ঢাকায় তার অভিনয় জীবনের সূচনা করেন। এরপর প্রতিভাবন পরিচালক জহির রায়হান তার লোক ছবি ‘বেহুলা’তে রাজ্জাককে লক্ষিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেয়ার মধ্যদিয়ে প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। ‘বেহুলা’ ছবিতে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি-এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে।

৬০-এর দশকের শেষ থেকে ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন রাজ্জাক-অভিনয় করেন ৩ শ’-এরও বেশি চলচ্চিত্রের নায়কের ভূমিকায়। রাজ্জাক অভিনিত জননন্দিত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ,  যে আগুনে পুড়ি,  জীবন থেকে নেয়া, কী যে করি, অবুঝ মন,  রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, অনন্ত প্রেম, বাদী থেকে বেগম ইত্যাদি।

দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য অভিনয় জীবনে রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী ও রাজ্জাক-শাবানা ও রাজ্জাক-ববিতার অনেক সিনেমা দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং যা রাজ্জাককে ঢালিউডের নায়ক রাজ উপাধিতে ভূষিত করেছে। কাজের স্বকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার।

গত বছর ২১ আগস্ট পৃথিবী ছেড়ে চলে যান তিনি। তবে বাংলা চলচ্চিত্রে এই কিংবদন্তী তার কাজ দিয়ে বেঁচে থাকবেন।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.