টমেটো চাষে স্বাবলম্বী অসংখ্য কৃষক

0

মো. দেলোয়ার হোসেন,চন্দনাইশ ::চন্দনাইশের শঙ্খনদীর তীরবর্তী চরাঞ্ছলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে টমেটো ক্ষেত। টমেটো আবাদ করে এখানকার কৃষকেরা খুজেঁ পেয়েছে স্বচ্ছলতার পথ। টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অনেক কৃষক।

প্রতি বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে শঙ্খনদীর তীরবর্তী বৈলতলী,বরমা,চরবরমা,চাগাচর,দোহাজারী,রায় জোয়ারা, লালুটিয়া,ধোপাছড়ি,সাতকানিয়া পুরানগড়,নলুয়া,কেউছিয়া, চরতি,আমিলাইশসহ বিভিন্ন এলাকা জুড়ে ব্যাপক টমেটোর চাষ হয়েছে।

কৃষকেরা প্রথমে বাড়িল আঙ্গিনায় উচুঁ ভিটায় পলিথিনের মাচা তৈরি করে টমেটোর বীজ বপন ও চারা তৈরি করে থাকে। অক্টোবরের শুরুতে টমেটোর চারা রোপন করে একটু বড় হলে শক্ত খুটিঁর সঙ্গে বেধে রাখে যেন মাটিতে পড়ে না যায়।

কৃষকেরা জানালেন চলতি মৌসুমে টমেটোর ফলন ভালো হয়েছে। অতিরিক্ত লাভ আর বাড়তি আয়ের জন্য কৃষকেরা চরে টমেটোর চাষ করে যাচ্ছেন। এসব এলাকার উৎপাদিত টমেটো এলাকার চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায় পাইকারী বিক্রেতারা।

চন্দনাইশে উন্নত জাতের দিগন্ত,রূপসী,বিউটি ফুল,লাভলী,ব্র্যাকের আবিষ্কৃত ১৭৩৬, সফল, কোহিনুর,মঙ্গল সুপার ও মঙ্গলরাজা বিভিন্ন জাতের টমেটোর উৎপাদিত হয়। তবে চন্দনাইশে বিউটি ফুল,দিগন্ত ও রূপসী জাতের টমেটোর আবাদ বেশি হয়ে থাকে। ভালো ফলন ও ভাল দাম থাকলে খরচ পোষয়ে কৃষকেরা লাভবান হয়।

উপজেলা বাণিজ্যিকভাবে টমেটোর চাষ দিন দিন বেড়ে চলেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা টমেটোর চাষ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে যাচ্ছে। শঙ্খ তীরবর্তী চরে প্রায় বারো মাসেই সবজি চাষা হয়। ফলে প্রতি বছর মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ টমেটো উৎপাদিত হয়। এ সকল উৎপাদিত টমেটো দোহাজারী রেলওয়ের বাজারে বিক্রির জন্য আনে কৃষকেরা। সেখান থেকে পাইকারী বিক্রেতারা ক্রয় করে ট্রাকের মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়।

এখানে উৎপাদিত টমেটো স্ব-স্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন। তাই প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ফলে টমেটোর চাষাবাদ করে এ এলাকার কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছলতা লাভ করে থাকেন। উচ্চ ফলনশীল টমেটোর চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন এ অ লের কৃষক। এলাকায় টমেটোর চাষ করে অনেকের ভাগ্য বদল হয়েছে।

কয়েকজন কৃষক জানালেন উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ স্বল্প পরিসরে শুরু করে লাভবান হওয়ায় অনেক কৃষক টমেটোর চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। উচ্চ ফলনশীল টমেটোর মধ্যে মিন্টুসুপার,বিউটি হাইব্রীড,সফলসহ ৭/৮ জাতের টমেটো উৎপাদন হচ্ছে।

কৃষকদের মতে কৃষি অধিদপ্তরের লোকজনদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে উচ্চ ফলনশীল জতের  টমেটোর চাষ করে তারা অনেক লাভবান হয়েছে। প্রথমে  যে সকল কৃষক ক্ষুদ্র পরিসরে টমেটোর চাষ করতেন বর্তমানে তারা বার্ণিজ্যিক পর্যায়ে টমেটোর চাষাবাদ শুরু করেছেন। ফলে কৃষকেরা হাজার হাজার টাকা বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন। তাদের মতে টমেটো চাষাবাদ করে এ পর্যন্ত কোন কৃষক লোকসানে পড়েনি। বরং স্বাবলম্বী হয়েছেন।

আগে শুধু শীতকালে টমেটোর চাষ করা হতো। এখন সারা বছর তথা গ্রীষ্মকালেও  টমেটোর চাষাবাদ হয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে চলতি মৌসুমে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম উন্নত জাতের টমেটোর চাষের বীজ ও কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করার পাশাপাশি তাদের চাষাবাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.