চৌকস পুলিশ অফিসার অতি. আইজিপি রৌশন আরা নিহত

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ কঙ্গোতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) রৌশন আরা বেগম নিহত হয়েছেন। রৌশন আরা বেগম কঙ্গোতে শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত ছিলেন।

গতকাল (৫ মে)  কঙ্গোর কিনশাসা নামক স্থানে স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রৌশন আরা বেগমকে বহনকারী গাড়ির চালকসহ বাকি দুজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশের এসপি (কমান্ডার) ফারজানাও রয়েছেন।

রৌশন আরা রাজধানী ঢাকার মগবাজারের সাবেক টিএন্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুননিসা-নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন রৌশন আরা বেগম।

মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ঢাকায় শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমি, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৯৪ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একই পদে টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।

রৌশন আরা ১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পান। রৌশন আরা বেগম দ্বিতীয় নারী, যিনি এ পদে আসীন হয়েছেন। এর আগে প্রথম নারী হিসেবে এ পদে ছিলেন ফাতেমা বেগম।

এই পুলিশ কর্মকর্তা দেশের বাইরে যুক্তরাজ্যের পুলিশ স্টাফ কলেজ, ব্রামশিল থেকে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং কোর্স এবং লিডারশিপ কোর্স ফর ফিমেললিডার’স ইন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।

পুলিশ বাহিনীতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দুইবার আইজিপি ব্যাচপ্রাপ্ত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘পিপিএম’ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ‘অনন্যা শীর্ষ দশ-১৯৯৮’ পুরস্কার ও ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১২ লাভ করেন।

তিনি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কসোভোতে ক্রাইম অ্যানালাইসিস কর্মকর্তা হিসেবে এবং সুদানে চিফ অব স্টাফ হিসেবে কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবং কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি প্রতিটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে জাতিসংঘ পদকে ভূষিত হন।

বাংলাদেশের প্রথম মহিলা এসপি মিসেস রওশন আরা বেগম ১৯৬১ সালের ২৫ জানুয়ারী মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম রোস্তম আলী পেশায় একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ছিলেন। মাতা বুলবুল নাহার একজন গৃহিণী। চার বোন ও একমাত্র ভাই এ্যাডভোকেট মার্গুব মোরশেদ (বাবলা), বর্তমানে মাগুরা জেলাজজ আদালতে জিপি হিসেবে কর্মরত।

মিসেস রওশন আরা বেগম ১৯৮৯ সালে মোঃ ইসরাইল হোসেনে সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। স্বামী জনাব ইসরাইল হোসেন একজন যুগ্ম সচিব। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত। তাঁর একমাত্র ছেলে রাগীব ইশরাক।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.