বাঙালির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি আজ বিশ্বজনীনঃ ড. অনুপম

0

কারেন্ট টাইমসঃ চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেছেন, বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি আজ বিশ্বজনীন হয়ে ওঠেছে। এ অর্জনে বিশিষ্ট ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও সর্বস্তরের সংস্কৃতিসেবীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সকলের সম্মিলিত সহযোগে আমাদের ভাষা সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছে। একসময় বাঙালির ভাষা সংস্কৃতির রাজধানী ছিল কলকাতা। আজ আর সে অবস্থা নেই। বাংলাদেশী বাঙালির ভাষা সংস্কৃতির আপন ঠিকানা।

আজ শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে নগর ভবন চত্বরে একুশ মেলা পরিষদ আয়োজিত ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসবের তৃতীয় দিনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথাগুলো বলেছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে ৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারি শুধু বাঙালির নয় এটা এখন ৯৭ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বের সকল জাতিগোষ্ঠীর কাছে আপন মাতৃভাষা ভালোবাসার বন্ধন হিসেবে সেতুবন্ধন রচনা করেছে। সেজন্য আমরা গর্বিত।

তিনি উল্লেখ করেন যে তথ্য প্রযুক্তি নতুন দিনের এটি যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। অন্যদিকে এই তথ্য প্রযুক্তি বা ফেইসবুক আমাদের চিন্তার জগতকে সংকুচিত করছে বিশেষ করে তরুন প্রজন্মের কাছে এটা মাদকের মতই সর্বনাশা নেশায় পরিণত হয়েছে। মাদক যেমন মস্তিষ্কের ক্ষতি করে তেমনি ফেসবুক ও তরুণ প্রজন্মের মস্তিষ্ককে ক্ষত বিক্ষত করছে। এটা আমাদের জন্য একটি অশনি সংকেত। সমাজকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন ফেসবুকের দিকে অধিকতর মাত্রায় ঝুকে না পড়ে।

তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে অভিহিত করে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ১০ বছরে ধারাবাহিক ভাবে ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে একটি গরীব রাষ্ট্র বলার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাড়িয়ে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

সভাপতির ভাষণে মেলা পরিষদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক প্রকৌশলী মৃনাল কান্তি বড়ুয়া বলেন, বাঙালির ভাষা সংস্কৃতি আলো ছড়িয়েছে। এই আলো ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সর্বত্র। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সোয়া কোটিরও বেশি বাংলা ভাষার কাছে বাংলাদেশ বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির উৎকর্ষের মডেল হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্মকে মাতৃভাষা ও আপন সংস্কৃতির শেখড় সন্ধানে প্রবৃত্ত করতে হবে। এরা যদি শিকড়চ্যূত হয় তাহলে বাঙালি জাতিসত্ত্বার অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। এই সত্ত্বটিকে উপলব্ধি করতে প্রতিটি শিক্ষিত বাঙালিকে নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে করণীয় অবদান রাখতে হবে।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে ভাষা সংস্কৃতি উৎসবের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, একুশ মেলা পরিষদের কার্যক্রম দু’যুগেরও বেশি সময় অতিক্রম করেছে। প্রতি ফেব্রুয়ারি মাসেই এই পরিষদের নানান বর্ণাঢ্য আয়োজন নগরবাসীর মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। এবারের আয়োজন ভাষা সংস্কৃতির উৎসব যে আলো ছড়িয়েছে আগামীতেও তা প্রজ্বলিত করে রাখা হবে।

এ ভাষা ও সংস্কৃতি উৎসব উদযাপন পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের মোস্তাফিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ভাষা সংস্কৃতি উৎসবের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল আমিন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আজাদ খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, ইয়াসির আরাফাত, রাশেদুল আরেফিন জিসান, সংস্কৃতিকর্মী মুজিবুর রহমান, সজল দাশ প্রমুখ। ভাষা সংস্কৃতি উৎসবের শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যম একাডেমী ও ঘুঙ্গুর নৃত্যকলা একাডেমী। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন নৃত্য শিল্পী সোমা বোস, নৃত্য শিল্পী স্বপন দাশ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন তারুণ্যের উচ্ছাস, পরিচালনায় বাচিক শিল্পী মুজাহিদুল ইসলাম। একক সংগীত পরিবেশন করেন বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী শিউলী মজুমদার, ঋতু বড়ুয়া, প্রিয়া চক্রবর্তী, পূজা বড়ুয়া, সমাপ্তি বড়ুয়া প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.