সংসদ নির্বাচন নিয়ে চন্দনাইশে কর্ণেল অলি উদ্বিগ্ন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, চন্দনাইশ : একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম জেলার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-১৪ সংসদীয় আসনটি। চন্দনাইশ উপজেলা ও সাতকানিয়া (আংশিক) পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ আসন। এ আসনে নির্বাচনে আ’লীগ ও বিএনপি’র মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এলডিপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রাক্তন মন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রম। বড় দু’টি রাজনৈতিক দলের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বার বার কর্ণেল অলির নাম আলোচনায় উঠে আসে। ফলে সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা চিন্তিত থাকলেও এবার কর্ণেল অলি নিজেই উদ্বিগ্ন রয়েছেন চন্দনাইশ আসনটি নিয়ে।

চট্টগ্রাম ১৪ চন্দনাইশ সংসদীয় আসনটি স্বাধীনতার পর থেকেই এই আসনটি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বার বার আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট রাজনৈতিক বাঘা বাঘা ব্যক্তিরা বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে শতভাগ চেষ্টা করেও অলি আহমদের নিকট থেকে আসনটি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলহাজ নজরুল ইসলাম চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আগামী জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রিহ্যাব চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপির) একক প্রার্থী দলের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।

বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া জেলে যাবার পর থেকে কর্ণেল অলি বিএনপি’র সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকছেন না। তবে তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে আসছেন। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করে কোন সভা-সমাবেশে বক্তব্যও রাখছেন না তিনি। ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বুদ্ধিজীবী মহলে কর্ণেল অলিকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, বিচার-বিশ্লেষণ অব্যাহত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সংসদ সদস্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চন্দনাইশ সাতকানিয়ার (আংশিক) নির্বাচনী এলাকায় দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে সেবা করে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে শঙ্খ নদীর ভাঙন রোধে ২৩০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বর্তমান ৯টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। তা ছাড়া চন্দনাইশ-সাতকানিয়া (আংশিক)-১৪ নির্বাচনী এলাকা দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং মাদকমুক্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। এলাকার মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শশ্মান এবং রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতা রিহ্যাব চট্টগ্রাম ও চন্দনাইশ সমিতির সভাপতি আবদুল কৈষুম চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য জননেত্রীর ভিশন -৪১ বাস্তবায়নের জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন এবং সমাজ সেবক হিসাবে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন এবং আমি চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ নিরসনে কাজ করেছি। দল যোগ্য মনে করলে নির্বাচন করব।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ আসনে কর্ণেল অলি আ’লীগ ও বিএনপি’র জন্য বড়ই মাথা ব্যথার কারণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমানে কর্ণেল অলি ২০ দলীয় জোটের সাথে সম্পৃক্ত থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় বিএনপি’র পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক শিক্ষা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের ছোট ভাই ডাঃ মহসিন জিল্লুর করিম এ আসনে বিএনপি’র একমাত্র প্রার্থী হলে ও জোটগত কারণে কর্ণেল অলিই প্রার্থী হবেন এমনটাই ভাবছেন-তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ফলে ডাঃ মহসিন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নেতা হিসেবে মূল দলে বিভক্ত নিরসন করতে না পারায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে এবং সরকার আন্দোলনের তেমন কোন কর্মসূচি এ নির্বাচনী এলাকায় হচ্ছে না বললেই চলে। ডাঃ মহসিন চন্দনাইশ বিএনপি’র রাজনীতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্ত রয়ে গেছে। সংগঠিতভাবে এগুতে পারছে না চন্দনাইশ বিএনপি। অন্য কোন বিএনপি নেতা এ আসনে প্রার্থী হতে পারছে না বিধায় এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম ও করতে আগ্রহী নয় বলে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের অভিমত।

এ দিকে আ’লীগের বর্তমান, সাবেক সংসদ সদস্যসহ অর্ধডজনের অধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও সবাই তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.