জিয়ার নাম ও কবরকে নিশ্চিহ্ন কর্মে মেতে উঠেছে সরকারঃ রিজভী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্বাধীনতা নিয়ে আওয়ামী নেতৃবৃন্দের দ্বিধা সর্বজনবিদিত। এই কারণে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তহীনতায় একজন মেজর জিয়া যখন হতাশাগ্রস্ত জাতির সামনে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্পর্ধিত বার্তা দেন তখন ওরা হতবাক, ক্ষুব্ধ ও অনুশোচনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের এই ঐতিহাসিক ব্যর্থতার জন্যই শহীদ জিয়ার ওপর ওরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। আর সেজন্যই প্রতিহিংসা মেটাতে এখন শহীদ জিয়ার নাম ও কবরকেও নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য কর্মে মেতে উঠেছেন।

আজ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ২৯ ডিসেম্বর নিশীথ রাতে ভোট ডাকাতি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী জোট ক্ষমতা দখলের পর তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা বা আত্মগ্লানি দেখা যাচ্ছে না। বরং তাদের বেপরোয়াভাব সকল সীমা লঙ্ঘন করেছে। তারা একের পর এক নির্লজ্জ বেহায়ার মতো লাগামহীন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মিড নাইট সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়।

ক্ষমতার দম্ভে এই অবৈধ সরকার হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার পর সরকার এখন কি করবে তা দিশা পাচ্ছেনা।

তিনি বলেন, এই হিংসুক সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আর আবেগের উৎস স্বাধীনতার মহান ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেরে বাংলা নগর থেকে শহীদ জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেলার নীলনক্সা বাস্তবায়ন শুরু করার পর এবার চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর দখল করতে মাঠে নেমেছে। গত সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে শেখ হাসিনার সম্মতিতে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’কে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব এনেছে মিডনাইট ইলেকশনের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার পরদিন গতকাল নামফলক কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে ক্যাডার’রা।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আবদুর রহিম শামীম ও নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রাহুল দাশের নেতৃত্বে দুপুর ১২টার দিকে নগরীর কাজীর দেউড়িতে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন শেষে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলকে কালিলেপন করে, যা একটা শুধু একটা নোংরামীই নয়, কাপুরুষতা। শাসকশক্তির পৃষ্ঠপোষণে দেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার অর্থই হলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অপমান করা।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,’মিড নাইট ভোটে গঠিত অবৈধ সরকার দৈত্যের মতো দেশের জনগণের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে যা ইচ্ছে তাই করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থককে কারাগারে ভরেছে। কারাগারগুলো ধারণ ক্ষমতার ৪-৫ গুন বেশী বন্দীতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। হাজার হাজার মামলা। লাখ লাখ আসামি। কোনো বাছ বিচার নাই। সরকারের সমালোচনা করলেই সে নাশকতার গায়েবী মামলার আসামি। সাধারণ মানুষের এখন নাভিশ্বাস দশা। দেশের গণতান্ত্রিক জনগোষ্ঠীর প্রাণশক্তি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্মম মানসিক ও শারীরিকভাবে যন্ত্রণা দেয়া হচ্ছে অন্ধকার কারাগারে রেখে। গতকালও বেগম জিয়াকে আদালতে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে কষ্ট দেয়ার জন্যই বসিয়ে রাখা। তার চিকিৎসা না দিয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করছেন প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দিলেও হৃদয়ের উপর কোন হুকুম চলে না। জিয়াউর রহমান কেবল কোনো ব্যক্তি নন, তিনি জাতীয়তাবাদী দর্শন ও আদর্শের পিতা। জনগণের প্রেরণার উৎস। তার নাম বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্র তাকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে না।’

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.