চট্টগ্রামে বিভাগীয় ৬ষ্ঠ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার সম্পন্ন
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা বলেছেন, বিজ্ঞান মানুষকে অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের আত্মসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে উদ্ভাবনমূলক কাজে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম ছাড়া উন্নত জাতি গঠন সম্ভব নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে এ দেশকে পুর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বাংলাদেশে বিনির্মাণের লক্ষ্যে আইসিটি কার্যক্রমকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসূচি নিয়ে তা বাস্তবায়ন করে চলেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে আইটি প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে দেশ আজ অনেক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ। সরকারের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে বিজ্ঞানভিত্তিক মানসম্মত পড়ালেখা করে ভালো ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে গড়ে উঠতে হবে। সরকারের ভিশন ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার।
আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টায় নগরীর সেন্ট প্ল্যাসিডস স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপি বিভাগীয় ৬ষ্ঠ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন ট্রাস্ট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ মেলার আয়োজন করেন।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের সৃষ্টি, আবিস্কার ও উদ্ভাবন যেন মানুষ কাজে লাগাতে পারে সেদিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। বিজ্ঞানের জয় হবেই। আমরা বিজ্ঞান জগত চাই। যারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে তারা অসীম ধৈর্যের। বিজ্ঞান মেলায় যেসব ছাত্র-ছাত্রী প্রকল্প প্রদর্শন করেছে তারা ছিল অসীম ধৈর্যের অধিকারী। তারা আগামীতে নিজের মেধা-মনন দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের বাইরে জাতীয় ও দেশকে রিপ্রেজেন্টের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোঃ নুরুল আলম নিজামীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা আফরিন মুস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী, খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর চৌধুরী মঞ্জুরুল হক ও চট্টগ্রাম বিজ্ঞান পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক জহুরুলাল ভট্টাচার্য। সভা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বিভাগীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় ক্যাটাগরীভিত্তিক চমকপ্রদ উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন, বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা, উপস্থিত বক্তৃতা ও বির্তক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাগণসহ বিভাগের ১১ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
উল্লেখ্য যে, এবারের মেলায় বিভাগের ১১ জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং বিজ্ঞান ক্লাব বা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সদস্যগণ জুনিয়র, সিনিয়র ও বিশেষ এ তিনটি ক্যাটাগরিতে তাদের উদ্ভাবিত ৮৪ টি প্রকল্প প্রদর্শন করেন।
স্কুল পর্যায়ে অর্থাৎ জুনিয়র গ্রুপে ১১টি জেলা থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিজয়ী হওয়া ১১টি প্রতিষ্ঠানের ১২টি দলের ১২টি প্রজেক্ট ও চট্টগ্রাম মহানগরের ৯টি প্রতিষ্ঠানের ২৪টি দলের ২৪টি প্রজেক্ট মেলায় প্রদর্শন করা হয়। একইভাবে সিনিয়র ক্যাটাগরিতে অর্থাৎ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১১টি জেলা থেকে বিজয়ী ১২টি দল ১২টি প্রজেক্ট এবং মহানগরের ৫টি প্রতিষ্ঠানের ১০টি দল তাদের ১০টি প্রজেক্ট প্রদর্শন করেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে বিশেষ ক্যাটাগরিতে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের ৪৪ জন উদ্ভাবকের ১৮টি দলের ১৮টি প্রজেক্ট এ মেলায় প্রদর্শন করা হয়।