ত্রাণ বন্টনে কোনো ধরণের গাফিলতি করা যাবে নাঃ মেয়র

0

সিটি নিউজঃ সরকারি খাদ্য সহায়তা দ্রুত বন্টন করতে কাউন্সিলরদেরকে ওয়াডের্র অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত করার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন।

তিনি আজ(৩১) মঙ্গলবার দুপুরে চসিক কনফারেন্স হলে কাউন্সিলরদের সাথে তৃতীয় দফার বৈঠকে এ কথা বলেন। বৈঠকে ২৯ থেকে ৪১ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর,সংরক্ষিত কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

এই সময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা,সচিব মো: আবু শাহেদ চৌধুরীসহ কর্পোরেশনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

সিটি মেয়র আরো বলেন সরকারি খাদ্য সহায়তা দ্রুত বন্টন করা যায়,ততই মঙ্গল। খাদ্য সহায়তা দেওয়ার নামে অস্বচ্ছল মানুষের জড়ো করা যাবে না। তালিকানুয়ায়ী তাদের ঘরে ঘরে পৌঁছায়ে দিতে হবে। এতে কোনো ধরণের গাফিলতি করা যাবে না মর্মে মেয়র তাদেরকে সর্তক করে দেন।

তিনি বলেন একই ব্যক্তি বারংবার সরকারি খাদ্য সহায়তা না পায়,সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এই প্রসংঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, অস্বচ্ছল ব্যক্তি কোন দলের,কার সমর্থক,কোথায় কার লোক সেই বিবেচনায় না নিয়ে মানবিক বিবেচনায় সরকারি খাদ্য সহায়তা সেই ব্যক্তির ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। কারণ এই মহুর্তে মানুষকে বাঁচানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে।

তিনি আরো বলেন প্রতিটি ওয়ার্ডে বিত্তবান লোক আছে। তারা বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ না করে সম্মিলিতভাবে বিলি বন্টন করলে এলাকার মানুষ অনেক বেশী উপকৃত হবে। এক্ষেত্রে প্রতিবেশীর হক সর্বাগ্রে। তাই কাউন্সিলর এবং বিত্তবান ব্যক্তিদের সাথে সমন্বয় সাধনের উপর গুরুত্বারোপ মেয়রের।

বিভিন্ন এজেন্সীর কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন আপনারা ইতোপূর্বে অনেক জনগুরুত্বপুর্ণ কাজ করেছেন। এই দুর্যোগের মুহুতে কাউন্সিলরদের যেভাবে কাজ করার সুযোগ আছে, সেভাবে এখনো সকল কাউন্সিলর দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই বলে কেউ করছেননা তাও নয়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার যে সুযোগ আছে, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির আহবান জানান সিটি মেয়র।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস একটি সংক্রমক ভাইরাস। এটি ছোঁয়াছে রোগ। এই রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এখনো কোনো ঔষুধ আবিষ্কার হয়নি। তবে ডাক্তারগন উপসর্গ দেখে এই রোগের ঔষুধ দিয়ে থাকেন। একথা সত্য যে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন মেনে চললে ৮০ ভাগ মানুষ এই রোগ থেকে আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। তবে যাদের বয়স ষাটের উর্দ্ধে তাদের জন্য একটু সমস্যায় পতিত হতে হয়।

নগরীতে মশার উপদ্রবের কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার এবং মশক নিধন শতভাগ নিশ্চিতকরণের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ঠ নিদের্শনা দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে প্রতি ওয়ার্ডে জীবাণূনাশক পানি ছিটিনোর পাশাপাশি মশা নিধনে লারবিসাইড ঔষুধ ছিটানোর জন্য সংশ্লিষ্ঠদের নির্দেশনা দিলেন সিটি মেয়র।

এই জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে মেয়র বলেন আগামীকাল থেকে প্রত্যেক ওয়ার্ডে লারবিসাইড ঔষুধ ছিটানো হবে। এই কাজে নিয়োজিত কর্র্মীরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জীবাণুনাশক পানি ছিটানোর ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। এমনকি ওয়ার্ড এলাকায় ঝোপ-ঝাড়সহ মশার প্রজনন স্থানগুলো ধ্বংস করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নগরীতে জীবানু নাশক পানি ছিটানো অব্যাহত রেখেছে চসিক : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আজ ৭ম দিনের মত নগরীর নিউ মার্কেট হতে কোতোয়ালী, নতুন ব্রীজ, কাষ্টম থেকে এয়ারপোর্ট রোড, চট্টেশ্বরী হয়ে গোলজার, পাঁচলাইশ থানা হয়ে মুরাদপুর ও ১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে প্রায় ৫০ হাজার লিটার জীবাণু নাশক পানি ছিটিয়েছে চসিক। এসময় সংশ্লিস্ট ওয়ার্ড কাউন্সলর ও চসিকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এলআইইউপিসি: ইউএনডিপি, ইউকেএইড এর আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্টির জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প(এলআইইউপিসি) এর উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর ২০ টি ওয়ার্ডের ৩৮৪ টি স্পটে হাত ধোয়ার পয়েন্ট হস্তান্তর করলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। এই প্রকল্পটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা করছে। এই পয়েন্টগুলোতে থাকছে সাবান, পানির ট্যাংক ও বালতি এছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৭৫ হাজার উপকারভোগীকে সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়া হবে।

উপকরণ হস্তান্তরকালে মেয়র করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সঠিক নিয়মে হাত ধোয়ার কোন বিকল্প নাই। আমি আশা করছি এই হাত ধোয়ার পয়েন্ট সমূহ দরিদ্র বসতি এলাকার মানুষদের জীবন সুরক্ষায় ভুমিকা রাখবে। এব্যাপারে মেয়র সকলের সহযোগিতা ও সচেতনতা কামনা করেন। এছাড়া চসিকের উদ্যোগে অবশিষ্ঠ ২১ টি ওয়ার্ডে ৩শত টি স্পটে হাত ধোয়ার পয়েন্ট স্থাপন করবেন। এসময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, এলআইইউপিসি এর টাউন ম্যানেজার সরোয়ার হোসেন খান, জিয়াউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.