চসিকের প্রশাসক পদে ত্যাগী নেতা খোরশেদ আলম সুজন

0

দিলীপ তালুকদারঃ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা, রাজপথের লড়াকু সৈনিক, প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছায়াসঙ্গী ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে  নিয়োগ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাসির উদ্দিনের দায়িত্ব শেষ হওয়ার একদিন আগে এ ঘোষনা আসলো মন্ত্রণালয় থেকে।

আজ মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

চসিক প্রশাসক মনোনীত হওয়ার পর এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’ তিনি বলেন, ৫০ বছর ধরে রাজনীতির মাঠে আছি। দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার মর্যাদা আমি রক্ষা করবো।

চট্টগ্রামের উন্নয়নে মহিউদ্দিন চৌধুরীর পথ ধরে এগুবেন জানিয়ে তিনি বলেন ‘এই শহর বাংলাদেশের হৃদপিণ্ড। এই শহরকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর যে স্বপ্ন ছিল আমি চেষ্টা করবো সেটাকে এগিয়ে নিতে।’

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লড়াকু এ সৈনিক শহরের বিভিন্ন দূর্ভোগ সমস্যা নিয়ে সব সময় সরব ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকের নানা সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন তিনি। স্থগিত হওয়া চসিক নির্বাচনে তিনিও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের প্রধান সমস্যা যানজট, ভাঙ্গা রাস্তা। এ ব্যাপারে নজর দেবো। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে আপগ্রেড করবো। হকারদের শৃঙ্খলায় আনতেও বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করবো।

খোরশেদ আলম সুজন তৎকালীন চট্টগ্রাম ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমানে মহসীন কলেজ) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি সায়েন্সে ভর্তি হন।

১৯৮৬ সালে জাতীয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মরহুম আবদুল মান্নানসহ ছাত্রনেতারা মিলে গঠন করেন সংগ্রাম কমিটি।

তিনি এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন সুজন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী জালালাবাদ পাহাড় আক্রমণ করার পর আহত বাঙালি সৈন্যদের সেবা দেন সুজনসহ সহকর্মীরা। বিহারীরা তাকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রাণে রক্ষা পান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সোচ্চার ছিলেন খোরশেদ আলম সুজন।

১৯৯০-৯৮ সালে চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও মাদকবিরোধী সংগঠনের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন সুজন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর অবরোধসহ অসহযোগ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন সুজন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে ৫ আগস্ট। গত ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সেটা স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।

ঈদুল আজহার ছুটি শেষে অফিস খোলার প্রথম দিনেই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.