বর্ষায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কা চসিক মেয়রের

0

সিটি নিউজ ডেস্ক: নাগরিক অসচেতনতার কারণে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা ও সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নে খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দেওয়ায় জমাট পানি মশা প্রজননের উৎসক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

খালে দেওয়া বাঁধের কারণে ময়লা-আবর্জনা জমে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন বলে জানান মেয়র। তিনি জানান, খাল ও বড় নালা-নর্দমাগুলো সিডিএর আওতায় থাকায় সিটি করপোরেশন এখন ছোট নালাগুলো থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে আন্দরকিল্লার কেবি আবদুচ ছাত্তার মিলনায়তনে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের ১০০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রাম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র এ মন্তব্য করেন। নগরীর উন্নয়নে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিভিন্ন পরিকল্পনা।

তিনি বলেন, ১০০ দিনের মশা নিধন অভিযানে প্রতি ওয়ার্ডে ২ জন শ্রমিক ফগার (ধোঁয়া) স্প্রে, ৫ জন হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে তরল ওষুধ ছিটানোর কাজে নিয়োজিত আছেন। মশা নিধনে তরল ওষুধের কার্যকারিতা নিরূপণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মেয়র বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চসিকের ১ হাজার কোটি টাকার দেনা ও নানাবিধ সমস্যা নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করি। এরপর ১০০ দিনের জনগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম (ক্রাশ প্রোগ্রাম) পরিচালনা করি।

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৩ ফুটের বেশি প্রশস্ত নালা ও খাল পরিষ্কার এবং পানি প্রবাহ রক্ষার সামগ্রিক দায়িত্ব সিডিএ’র হলেও মশার প্রজনন বৃদ্ধি রোধ ও পানি প্রবাহের স্বার্থে অনেক বড় নালা ও খাল থেকে চসিক মাটি উত্তোলনসহ আবর্জনা পরিষ্কার করেছে। ২ হাজার ১২০ ট্রিপে ১০ হাজার ৬০০ টন আবর্জনা ডাম্পিং করা হয়েছে।

মেয়র বলেন, ৩০টি সড়কে ৭৬ কিলোমিটার অংশে ২ হাজার ৯৬০টি পোলে ৪ হাজার ১১টি এলইডি বাতি বসানো হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চসিকের ৩৩ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে আনুতোষিকের ৬৭ লাখ ২৫ হাজার ১১০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ঠিকাদারদের পাওনা বকেয়া বিল থেকে ২২ কোটি ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬০ টাকা, সড়কবাতির ১ কোটি ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৬ টাকা ও বিভিন্ন স্থাপনার ২ কোটি ৩৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৪ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

চসিকের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে ৫টি আয়বর্ধক প্রকল্পের নকশা আহ্বান করা হয়েছে, আরও ৩৭টি প্রকল্পের বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে। চসিকের ৪১ ওয়ার্ডের ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭২ জনকে প্রথম ডোজ ও ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৮ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। ১০০ দিনে চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আগের ৯৩০টি, নতুন ১ হাজার ১৫৬টি মিলে ২ হাজার ৮৬ সালিশি মামলার মধ্যে ৯২৬টি নিষ্পত্তি হয়েছে। আগের ৪৪টি নালিশি মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১৪টি। ৬৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২৪১টি মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় ও ১৭টি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চসিকের প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।

সিটি নিউজ/এসএরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.