আমি মুন্নিকে দত্তক নিয়েছি-সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন

চট্টগ্রাম: এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান মুন্নি সাহাকে দত্তক নিয়েছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।  প্রয়াত মেয়ে ফৌজিয়া সুলতানা টুম্প‍াকে হারানোর শোক ভুলতে মুন্নি সাহাকে দত্তক নেয়ার কথা বলেছেন মহিউদ্দিন।

সোমবার (১৪ মার্চ) মুন্নি সাহা চট্টগ্রাম নগরীর চশমাহিলের বাসভবনে মহিউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে যান।  এসময় মহিউদ্দিন চৌধুরী তাকে পালিত কন্যা হিসেবে দত্তক নেয়ার ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী  বলেন, আমি মুন্নিকে দত্তক নিয়েছি।  সে আমার পালিত কন্যা।  আমি জীবিত থাকা পর্যন্ত পিতা হিসেবে মেয়ে মুন্নির সব দায়িত্ব পালন করে যাব।

‘ধনী, গরীব যে কেউ তো আমার আপনজন।  সবাইকে আমি সন্তানের চোখে, আপনজনের মতোই দেখি।  আমার দুই ছেলে, চার মেয়ে।  এখন থেকে মুন্নি আমার আরেক মেয়ে। ’ বলেন মহিউদ্দিন।

জানতে চাইলে মুন্নি সাহা  বলেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে আমি ২০ বছর ধরে চিনি।  আমি তা‍ঁকে শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি।  পিতার মতোই শ্রদ্ধা করি।  এটা এমন না যে, কাগজে-কলমে, টাকাপয়সা দিয়ে তিনি আমাকে দত্তক নিয়েছেন।  শুধুমাত্র ভালবাসা থেকেই উনি আমাকে পালিত কন্যা হিসেবে নেয়ার কথা বলেছেন।  উনি বললেও উনি আমার পিতার মত, না বললেও পিতার মত।  সুতরাং দত্তক নেয়া এখানে বড় কোন বিষয় নয়।

তিনি বলেন, আমি চট্টগ্রামে গেলেই একবার উনাকে ফোন করি, দেখা করি।  দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টার জন্য গেলেও আমি বাসায় গিয়ে একবার দেখা করে আসি।  উনার ছেলে নওফেলের চেয়েও আমার সঙ্গে উনার সম্পর্কটা অনেক সহজ।  আমি বাসায় গেলে উনার হাত ধরে বসে থাকি।  উনি টুম্পার কথা মনে করে কান্না করেন।

২০০৮ সালের ১৭ অক্টোবর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী টুম্পা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।  এক-এগারো পরবর্তী তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে তখন মহিউদ্দিন ছিলেন কারাগারে।  মেয়ের মৃত্যুর সময় পিতা হিসেবে তার শিয়রে থাকতে না পারার মানসিক যন্ত্রণার কথা সবসময় বলেন মহিউদ্দিন।

মুন্নি সাহাকে দত্তক নেয়ার বিষয়ে  আলাপে মহিউদ্দিন বলেন, আমার মেয়ে টুম্পা, সে আর কোনদিন ফিরে আসবে না।  একটা অসহ্য যন্ত্রণা, আমি সবসময় অনুভব করি।  এটা বলে বোঝানো যাবেনা।  মুন্নিকে আমি টুম্পার জায়গা দিয়েছি।  আমি মুন্নিকে দেখলে টুম্পার কথা ভুলে থাকতে পারি।

মুন্নি সাহা  বলেন, টুম্পা মারা যাবার পর আমার হাত ধরলে তিনি নাকি টুম্পাকে দেখতে পান।  তিনি আমার হাত ধরে অনেক সময় কান্না করেছেন।  আমি উনার বাসায় গিয়ে পিতার মতো উনাকে সান্ত্বনা দিয়েছি।  আমার মাঝে উনি উনার হারানো মেয়েকে খুঁজে পেয়েছেন, এটা আমার বড় পাওয়া।  আমিও সারাজীবন উনাকে পিতার মতোই শ্রদ্ধা করে যাব।  যে যাই বলুক, উনাকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি।

মহিউদ্দিনের সঙ্গে মুন্নি সাহার সাক্ষাতের সময় তার স্ত্রী বেগম হাসিনা মহিউদ্দিন এবং বড় ছেলে বিজয় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্য‍ারিস্টার চৌধুরী মহিবুল হাসান নওফেলসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.