কক্সবাজারে অবৈধ রোহিঙ্গা-বাঙ্গালীর বিয়ে !

জামাল জাহেদ, কক্সবাজার :  কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত উখিয়া ও টেকনাফে স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের সাথে রোহিঙ্গাদের বিয়ের বিষয়টি আবার ও মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। পূর্বে উপজেলা প্রশাসনের নিরবতা কাজে লাগিয়ে উখিয়ার কুতুপালংয়ের পূর্ব পাড়া, পশ্চিম পাড়া, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে কচুবনিয়ায় প্রবাসী রোহিঙ্গাদের সাথে স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ও প্রবাসী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশীদের নিষিদ্ধ বিয়ে থামছে না।তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, শরণার্থী ক্যাম্পের কিছু সংখ্যক চিহ্নিত রোহিঙ্গাদের সহযোগীতায় মায়ানমারের প্রবাসী রোহিঙ্গা সাথে বাংলাদেশি স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে সহজ এবং নিত্যদিনের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। মায়ানমারের প্রবাসীদের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয়রা রোহিঙ্গারা স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ের জন্য দালালী করছে।অন্যদিকে বাংলাদেশী অভিভাবকদের অজ্ঞতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্থের প্রলোভনে ফেলে জোর করে প্রবাসী রোহিঙ্গাদের সাথে স্কুল কলেজ ছাত্রীদের বিয়ে দিতে বাধ্য করছে। প্রশাসনের কাছে রোহিঙ্গা বাঙ্গালী নিষিদ্ধ বিয়ের সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই বলে জানা যায়।

এছাড়াও টাকার বিনিময়ে নকল আইডি কার্ড ও জন্ম সনদ পত্র তৈরি করে নিষিদ্ধ রোহিঙ্গা-বাঙ্গালী বিয়ে নিবন্ধন করা হয় বলে জানা গেছে।কুতুপালংয়ের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের সাথে বাংলাদেশী বিয়ের নিষিদ্ধ কঠোর শাস্তি সম্বন্ধে তারা জ্ঞাত নন। রোহিঙ্গা বিয়ের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্তান বাংলাদেশের নাগরিক হতে পারবে না বলে জানালে তারা এই ব্যাপারে জ্ঞাত নন। স্থানীয় অসাধু প্রভাবশালী এবং জনপ্রতিনিধিরা সহযোগীতা করায় প্রশাসনকে চোখ ফাঁকি দিয়ে বিয়ে দিতে তাদের কোন সমস্যা হয় না। টাকার বিনিময়ে সবকিছু ম্যানেজ করা যায় করা যায়।উখিয়ার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদুল ইসলাম জানান, বর্তমান ইউএনও মাঈন উদ্দিন বিষয়টির দিকে নজর দিয়ে উখিয়ার কলেজ ছাত্রীদের ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করে নিষিদ্ধ রোহিঙ্গা বিয়েতে সহযোগীতাকারী দের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান।

বিশিষ্ঠ সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, উখিয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য আদিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নিষিদ্ধ বিয়ে বন্ধের প্রশ্নটি এখন ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।এটি বাংলাদেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার সাথে ও জড়িত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টির প্রতি এখনই নজর দিতে হবে।রাজাপালং ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হক চৌধুরী জানান, শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের শিক্ষার অভাবকে কাজে লাগিয়ে নগদ অর্থের প্রলোভনে ফেলে অগোছরে নিষিদ্ধ বিয়ে সংগঠিত করছে। আমি বরাবরের মতই এইসব নিষিদ্ধ বিয়ের বিরুদ্ধে সজাগ আছি।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাঈন উদ্দিন জানান, উপজেলা প্রশাসন এইসব বিয়ের ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।

আমরা রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করা এনজিও গুলোর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ করছি। প্রশাসন সঠিক তথ্য ফেলে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বর্তমান ইউএনও মাঈন উদ্দীন উখিয়া উপজেলায় দায়িত্ব নেওয়ার পর উখিয়াকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করেছেন।উখিয়াকে মডেল উপজেলায় রুপান্তরের অংশ হিসেবে উখিয়ার স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের প্রবাসী রোহিঙ্গাদের নিষিদ্ধ বিয়ে বন্ধে সচেতনতা সৃষ্ঠির পাশাপাশি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং উখিয়ায় ছাত্রী সমাজকে প্রবাসী রোহিঙ্গা বিয়ের শিকার হতে হবে না এমনটাই আশা প্রকাশ করেন উখিয়ার ছাত্র ও সুধী সমাজ।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.