আগামী সোমবারের মধ্যে আটককৃতদের মুক্তি দিতে হবে

বাঁশখালী প্রতিনিধি : গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে সমাবেশ গতকাল হাদির পাড়া কমিউনিটি সেন্টার মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। গত ৪ এপ্রিল সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত আনোয়ার ইসলাম ও মর্তুজ আলীর বড় ভাই গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বদি আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন, সাবেক মেয়র ও সাংসদ এবং গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলন কমিটির প্রধান পৃষ্টপোষক আলহাজ্ব মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সরলের সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির নেতা আমিনুর রশীদ চৌধুরী, এনামুল হক সিকদার মানিক, মাওলানা আবুল কালাম মফজল আহমদ তালুকদার, সাংবাদিক শফকত হোসাইন চাটগামী, আবদুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আবদুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন মিয়া, শাহরিয়ার কবির, এজাহার মিয়া প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৪ জন নিহত হওয়ার পর অনেক নেতা অনেক ভাবে এসে অনেক প্রতিশ্র“তি দিয়ে গেলেও বাস্তবের সাথে তার কোন মিল নেই।

গরীব লোকের সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে আল্লাহ তাদেরকে রেহাই দেবে না। সভায় বক্তারা বাঁশখালীর গন্ডামারায় কয়লা বিদ্যুৎ বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আলহাজ্ব মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা আর কাঁদিব না। এই ঘটনার ন্যায় বিচার পেতে সঠিক পথে আন্দোলন চালিয়ে যাব। তিনি যত বড় সমস্যা তত বড় যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে নেতৃত্ব দিলে সঠিক ভাবে বিচার পাওয়া যায়। সিএনজি চালক দিয়ে বিমান চালানো যায় না। শহীদের রক্তের সাথে বেইমানী করবে না। আমি সব সময় পশ্চিম বাঁশখালীর জনগণের সাথে ছিলাম এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। বাঁশখালীর পূর্বে বালুময় আর পশ্চিমে হচ্ছে ময়না মাটি। এখানকার মাটিতে যে একবার স্লিপ খায় সে দাড়াতে পারে না।

এ ঘটনাকে নিয়ে অনেকে রাজনীতি শুরু করে নির্বাচনী বৈতরনী পার চেষ্টা করছে। কয়দিন পর ইউপি নির্বাচন এই নির্বাচন এলে সবাই এই ঘটনা ভুলে যাবে। তাই নির্বাচনের আগেই এ ঘটনার সুষ্ঠ সমাধান চাই। তিনি বাঁশখালীর সর্বস্তরের জনগণকে ধর্য্য ধারণ করে সরকারের কাছে ৯টি দাবী পেশ করেন। গ্রেফতারদের আগামী ৫ দিনের (সোমবারের মধ্যে) মুক্তি দিতে হবে। নিহতের পরিবারকে ৫ দিনের ১৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। বেশী আহতদের এক লক্ষ টাকা এবং কম আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ হবে। সাধারণ জনগণ যাতে নিশ্চিতে ঘুমাতে পারে নিশ্চয়তা প্রদান এবং অযথা কোন আসামী হয়রানি করতে পারবে না।

ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পেছনের কারণ সুষ্ঠ তদন্ত করে বের করতে হবে এবং এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৩ প্রকারের ছাড়পত্র সাধারণ জনগণকে দেখাতে হবে। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ক্ষতি হবে না তা প্রকাশ্যে ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে জনগণকে দেখাতে হবে। গন্ডামারা বাঁচাও আন্দোলন কমিটির ৪০ সদস্য বিশিষ্ট টিমকে বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কয়লা বিদ্যুৎ থাকলে তা দেখাতে হবে অথবা সাধারণ জনগণ বিশ্বাস করে এই ধরনের ১০ জনকে দেশের বাইরে নিয়ে কয়লা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দেখাতে হবে এবং জনগণের সাথে প্রকাশ্যে মত বিনিময় সভার মাধ্যমে এই সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। সমাবেশ শেষে তিনি শহীদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
আন্দোলনের নায়ক লেয়াকত কোথায়?
৪ এপ্রিলের ঘটনার পর থেকে যিনি আন্দোলনের শীর্ষ ভাগে ছিলেন গন্ডামারার সাবেক চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী গতকাল সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না। এ ব্যাপারে গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি নিহত মর্তুজ আলী ও আনোয়ার হোছেনের ভাই বদি আহমদের কাছে জানতে চাইলে আমাদের কমিটিতে লেয়াকত আলী নেই। তাই সে আসেনি। এ সময় সাবেক মেম্বার আবদুর রহমান বলেন, বর্তমানে লেয়াকত আলী ঢাকায় অবস্থান করছেন। বেগম জিয়ার সাথে দেখা করবেন এবং মাজার জিয়ারত করবেন। ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আন্দোলন নতুন করে শুরু হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.