বিনিয়োগ বাড়িয়ে শিক্ষাবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে

সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল : আজকের দিনে উন্নয়ন কেবল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয় বরং মানুষের অগ্রগতি যার সবচাইতে বড় উপকরন হল তার শিক্ষা, শিক্ষার মূখ্য উদ্দেশ্য হল সততা আর পরনির্ভরতার বেড়াজাল আর সীমাবদ্ধতা থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। শিক্ষা মানুষের বস্তুগত আর মনোগত স্বাধীনতা বাড়িয়ে দেয় – তার নিজের ওপর, জীবন পদ্ধতির ওপর, আর তার চারপাশের পরিবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ায়। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদের গবেষণনায় দেখা গেছে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও শিক্ষার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়নের অন্যতম শর্ত হচ্ছে শিক্ষা এবং অবশ্যই মানসম্পন্ন শিক্ষা।

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এমডিজির অসমাপ্ত কাজ ও পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) যাতে ১৭টি গোল ১৬৯টি টার্গেট রয়েছে। দেখা গেছে উন্নত দেশগুলোর অর্থায়নে তেমন প্রতিশ্রুতি না দেওয়ায়- এটি অর্জন এখন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এ বাস্তবতার আলোকে শিক্ষা বিষয়ক গ্লোবাল অ্যাকশন সপ্তাহ’র প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘‘আগামীর জন্য বিনিয়োগ, শিক্ষার অধিকার চাই-এখনই’’। ইপসা ও গণসাক্ষরতা অভিযান যৌথভাবে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তাগণ উপরোক্ত মতামত প্রদান করেন। ইপসা’র পরিচালক (এসডিপি) মো: মাহাবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় “মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা: প্রেক্ষাপট চট্টগ্রাম” বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আগ্রাবাদ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারা আলম। প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি, চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ও সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাক, চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার এবং দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ’র নগর সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম. নাসিরুল হক।

গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। ইপসা’র প্রোগ্রাম অফিসার ফারহানা ইদ্রিসের উপস্থাপনায় উক্ত সভায় অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মোহাং গিয়াস উদ্দিন এবং কাউন্সিলর আবিদা আজাদ। উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধ’র উপর মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন স্বপ্নীল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র মোহাম্মদ আলী, এফপিএবি’র ওয়াহিদুজ্জামান কামাল, শ্রমিক নেতা এম, এ, সাত্তার, দেশ টিভি’র বিভাগীয় প্রতিনিধি আলমগীর সবুজ, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ’র আবু মোশারফ রাসেল, অপরাজেয় বাংলাদশ’র মোহাং মাহাবুবুল আলম, পিএসটিসি’র পিযুজ দাশ গুপ্ত, চন্দনাইশ উপজেলা শিক্ষা উন্নয়ন কমিটির সদস্য আহসান ফারুক, মাইশা’র ইয়াছিন মঞ্জু, সিআরআই’র নোমান উল্লাহ বাহার, স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য ডা. আশীষ কুমার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিরুপম মারমা প্রমূখ।

সভায় অংশগ্রহনকারীরা আরও বলেন, শিক্ষাকে বাণিজ্যিককিরণ করা যাবে না এবং আসন্ন বাজেটে শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট বাড়াতে হবে পাশাপাশি শিক্ষানীতির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত “মা সমাবেশ”র ব্যবস্থা করতে হবে। পরিচালনা পরিষদে দানশীল ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করা দরকার। রাজনৈতিক নিয়োগ অনেকক্ষেত্রে যথাযথ কল্যাণ ও উন্নয়ন আনতে ব্যর্থ হয়। শিক্ষা নিয়ে বারে বারে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে শিক্ষার্থীদের আর গিনিপিগ বানানো যাবে না। এছাড়া শিক্ষার সকল পর্যায়ে শিক্ষাক্রমের নিরবিচ্ছিন্ন পরিমার্জনা, নবায়ন ও উন্নয়নের সুসংহত ব্যবস্থা করা দরকার।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.