আধুনিকায়নে বাঁশখালীর চাঁনপুর পুকুরিয়া চা-বাগান

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী  :  বাঁশখালীর পুকুরিয়ায় অবস্থিত চাঁনপুর বৈলগাঁও চা-বাগান সবুজের সমারোহে ভরে গেছে। বর্তমান মৌসুমে চা গাছে নতুন পাতা গজিয়ে উঠতে শুরু করায় চা-বাগানে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি চা-পাতা সংগ্রহ করতে পারলে বলে জানান চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিটি গ্র“প চা বাগানটি দায়িত্ব গ্রহণ করে অনেক নতুন পরিকল্পনা হাতে নেয় দেশের শীর্ষ স্থান দখল করতে । বর্তমানে চা-বাগানের কচি পাতা গুলো সবার মন কাড়ে। বাঁশখালীতে অবস্থিত ৩ হাজার ৪ শত ৭২.৫৩ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই চা-বাগানটি এক সময়ে সিলেট চা বাগানের অধীনে থাকলেও বিগত ২০০৩ সাল থেকে ব্র্যাক এর তত্বাবধানে ছিল।

গত ৫ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে সিটি গ্র“প এই চা-বাগানটি নিজেদের করে নেয়। বর্তমানে প্রতিদিন ৬ শতাধিক শ্রমিক এই চা বাগানে তাদের শ্রমের মাধ্যমে নতুন পাতা উৎপাদন ট্রেসিং থেকে শুরু করে চা-বাগানের সামগ্রিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাঁশখালীর চা সারা দেশে মানের দিক দিয়ে নিজের অবস্থান করলেও চট্টগ্রামে প্রথম স্থানে রয়েছে বলে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ এই প্রতিনিধিকে জানান। বিগত ২০১৬ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ২৫ হাজার কেজি ধরা হয়েছে। বিগত বছরের লক্ষ্যমাত্রা যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় এবং নতুন করে আরো প্রায় ২শ একর চা বাগান সৃজন করায় এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চা বাগান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চা বাগানের অভ্যন্তরে ৬ শতাধিক কর্মচারী নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা সহ অন্যান্য সার্বিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলে জানান চা-বাগানের ম্যানেজার ।

বাঁশখালীর চা-বাগানকে আধুনিক পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। বিশাল চা-বাগান জুড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন দেশ-বিদেশ থেকে নানা শ্রেণির মানুষ এখানে এক নজরে দেখার জন্য ছুটে আসে। সরকার চা উৎপাদনের বিক্রিকৃত অর্থ থেকে সুনির্দিষ্ট হারে ভ্যাট পান বলে জানান, চা বাগানের ম্যানেজার আবুল বাশার। তিনি আরো জানান, বাঁশখালীর এই বিশাল চা বাগানের চা পাতা সারা দেশে সুখ্যাতি রয়েছে। যার ফলে দেশের যত সব চা বাগান রয়েছে বাঁশখালীর চা বাগানের পাতা মানের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এবং চট্টগ্রামে প্রথম স্থানে রয়েছে। এই মানের জন্য চা বাগানের কর্মরতরা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন যত বৃদ্ধি পায় সরকার রাজস্ব তত বেশি পায়।

বর্তমান বাঁশখালীর চা বাগানের দায়িত্ব গ্রহণ করা সিটি গ্র“প আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাঁশখালীর চা বাগানের আয়তন ২শ একর করে একদিকে বিশাল আকারের চা উৎপাদনে উন্নীত করা অপরদিকে ক্লোন চায়ের দিক দিয়ে দেশের সেরা চা বাগানে পরিণত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান, আগে চা বাগানের উন্নয়ন হলে দেশের জনগণ উপকৃত হবে এবং স্থানীয় জনগণ নানা ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। এজন্য তিনি সকলের সহযাগিতাও কামনা করেন।

বাঁশখালীর চা বাগান চট্টগ্রামের একটি আলোকিত পর্যটন স্পট হিসেবেও অনেকেই এই আলোচিত চা-বাগানে ঘুরে যান তাদের মত করে। বাঁশখালীর চা বাগানের আধুনিকায়ন ও দেশের শীর্ষ স্থান পেতে বর্তমান কর্তৃপক্ষ সকলের সার্বিক সহযোগিতা সহ দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি সহ নানা ভাবে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.