চলে গেলেন মহাশ্বেতা দেবী

ঢাকা : ‘হাজার চুরাশির মা’ তথা জনপ্রিয় লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী। আজ (২৮ জুলাই) বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটা ১৭ মিনিটে দক্ষিণ কলকাতার বেলেভিউ নার্সিংহোমে মারা যান। জনপ্রিয় লেখিকার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সাহিত্য অঙ্গণ, শিল্পী এবং পাঠক মহলে।

তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী। পশ্চিমবাংলার উপজাতি এবং নারীদের নিয়ে তার কাজের কথা কখনোই ভোলা যাবে না। তার বিভিন্ন লেখাতেও তাই বারবার উঠে এসেছে মেয়েদের ওপর শোষণ এবং বঞ্চনার কথা।

লেখালেখির পাশাপাশি সবসময় সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে নিজকে জড়িয়ে রাখতেন। মহাশ্বেতা দেবী অধ্যয়ন করেছিলেন শান্তিনিকেতনে, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাবেক সরকারের বিপুল পরিমাণে কৃষিজমি অধিগ্রহণ এবং স্বল্পমূল্যে তা শিল্পপতিদের কাছে বিতরণের নীতির তিনি কড়া সমালোচনা করেছিলেন। এছাড়া তিনি শান্তিনিকেতনে প্রোমোটারি ব্যবসার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেছেন।

মহাশ্বেতা দেবী একটি মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মহাশ্বেতা দেবী শিক্ষালাভের জন্য শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে এম এ ডিগ্রী লাভ করেন। গত দেড় সপ্তাহ সময় ধরে তিনি কিডনি সহ অন্যান্য বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন।

সাহিত্যে কৃতির জন্য ২০০৬ সালে পেয়েছেন ভারত সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ। সাহিত্য আকাদেমির সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশ কয়েকবার নোবেল পুরস্কার লিস্টে তার নাম থাকা সত্ত্বেও শেষ অব্দি তিনি নোবেল পুরস্কার পাননি।

প্রখ্যাত নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।সমাজের প্রত্যন্ত মানুষের জীবন ও নকশাল আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা এই উপন্যাগুলি বেশ সাড়া ফেলেছিল। তাঁর লেখা ‘অরণ্যের অধিকার’, ‘হাজার চুরাশির মা’, ‘অগ্নিগর্ভ’ প্রভৃতি উপন্যাসের জন্য তিনি সমাদৃত হয়েছে সাহিত্যিক মহলে। তার লেখা অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.