দেশকে জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত করার সময় এখন – তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু

0

ঢাকা অফিস   :   নির্বাচন-সংবিধান নিয়ে আলোচনার আগে জঙ্গি-সন্ত্রাসমুক্ত রাজনীতির ফর্মুলায় ঐকমত্য দরকার। এখন এটা নির্বাচন বা সংবিধান নিয়ে আলোচনার মৌসুম নয়, দেশকে জঙ্গি-সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত করার সময়।

মঙ্গলবার দুপুরে তথ্য মন্ত্রনালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এক কথা বলেন।

সাম্প্রতিককালে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের দাবির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন নির্বাচন নিয়ে কোনো সঙ্কট নেই। এই মুহুর্তে নতুন করে আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির পেছনে কোনো যৌক্তিক ও বাস্তব কারণ নেই। দেশে আগাম বা মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বাস্তব কারণ বা প্রয়োজনীয়তাও নেই।’

সংবিধান ও আইন অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটার অন্যথা হবার বা করার কোনো সুযোগও নেই। সুতরাং যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে কোন শঙ্কা বা প্রশ্নেরও অবকাশ নেই।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার ও সুযোগ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলের আছে। যে কোনো ব্যক্তিরও নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার সংবিধান ও আইনানুযায়ী সুসংরক্ষিত। কোনো দল বা ব্যক্তিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে জোর করে বিরত রাখার কোনো সুযোগ নেই।’

‘গত ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন এবং এর আগে-পরে দেশে অসংখ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘সকলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’-এর কথা বলছে যে বিএনপি-জামায়াত, তারাও ৫ জানুয়ারির আগে-পরে নির্বাচনে তাদের ইচ্ছামত অংশগ্রহণ বা বর্জন করেছে।’, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির নির্বাচনের দাবির পিছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও বিএনপিকে কেউ বলপ্রয়োগ করে নির্বাচনের বাইরে রাখেনি। বরং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য নিজেই উদ্যোগী হয়েছিলেন। দেশ-বিদেশের সকল মহল বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য আবেদন-নিবেদন-অনুরোধ করেছিল। কিন্তু বিএনপি-জামাত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য সীমাহীন সন্ত্রাস, রক্তারক্তি, খুনোখুনি, জ্বালাও-পোড়াও, অন্তর্ঘাত ও নাশকতার পথে চলে যায়। সুতরাং তখন নির্বাচন বিএনপির এজেন্ডা ছিল, এখনও নির্বাচন বিএনপির এজেন্ডা না।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্যেশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘লাগাতার অন্তর্ঘাত, নাশকতা ও আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে ব্যর্থ হবার পর, জনগণের ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যানের মুখে বিএনপি নতুন করে নির্বাচনের দাবি তুলে জলঘোলা করে নতুন করে অন্তর্ঘাত, নাশকতা ও আগুনসন্ত্রাসের ফন্দি খুঁজছে।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের আলোকে পঞ্চদশ সংশোধনীর পর বিচারবিভাগকে সম্পৃক্ত করে পুরানো ধাঁচের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃচালু করা সম্ভব না। এটা জানার পরও পুরাতন ধাচের নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃবহালের দাবি, মুর্খতা বা জ্ঞানপাপ ছাড়া আর কিছুই না। এ দাবি করার মধ্যেই ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিষয়টি স্পষ্ট।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণ-কথাটাই মতলববাজী কথা। সংবিধান ও আইনে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ধারিত আছে। যারা অপরাধী, যারা যুদ্ধাপরাধী তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা রাখেনা। যারা গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে গণতন্ত্রের পিঠে ছোবল হানে, যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না, সেই জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী গণতন্ত্র ও নির্বাচনে হালাল না।’

সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেয়ার আগে, গণতন্ত্রকে অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসবাদী ও গণ-অপরাধী শক্তিকে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বাইরে রাখার ফর্মূলার বিষয়ে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.