প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেনঃ প্রধানমন্ত্রী
সিটি নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের জন্য সরকারের চালু করা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমরা চাই মেয়েরা বিনিয়োগ সেক্টরে এগিয়ে আসুক। এখন বাংলাদেশের সব জায়গায় মেয়ের অবস্থান রয়েছে। পার্লামেন্টে সব জায়গায় মেয়েদের অবস্থান। ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েরা ভালো করছেন। স্বর্ণ পেয়েছেন। এসএ গেমসে মেয়েরা স্বর্ণ জয় করেছে।
আজ সোমবার (৯ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা হচ্ছে। এখানে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মেয়েরা উদ্যোক্তা হোক এটা আমরা চাই। অনুষ্ঠানে পাঁচ জন নারী ও তাদের পরিবারের হাতে বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন। যেখানেই মেয়েরা কাজ করছে সব ক্ষেত্রে তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি একটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। নারীরা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে, বেগম রোকেয়ার সে স্বপ্ন আজ বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া স্বপ্ন দেখতেন যে নারীরা জজ-ব্যারিস্টার হবে, তারা বিভিন্ন পেশায় কাজ করবে। আমি বর্তমানে এতটুকু দাবি করতে পারি, বর্তমানে বাংলাদেশের মেয়েরা সেই জায়গাটা করে নিতে পেরেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়া হয়তো চাইতেন একজন নারী কোনো রাষ্ট্রের প্রধান হবেন। সমাজ ও পরিবারে পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে, পা ফেলে চলবে। সমান অধিকার ভোগ করবে। সেটা এখন নিশ্চিত করতে পেরেছি এটা আমরা দাবি করতে পারি।
১৯ শতকের দিকে পর্দার নামে নারীদের ঘরে বন্দী করে রাখা হতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তখন পড়াশুনার সুযোগ ছিল না। আর মুসলমান মেয়েদের জন্য আরও কঠিন অবস্থা ছিল। সেই সময় সেই অন্ধকার জগত থেকে নারীদের আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া। আজ আমরা যে অবস্থানে এসেছি এতে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। তাই তার নামে পদক দিতে পেরে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত এবং নিজেকে ধন্য মনে করছি।
সরকার প্রধান বলেন, নারীদের শুধু শিক্ষা দিলেই হবে না, তাই আমরা সরকারে এসে বিভিন্ন পদে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। প্রথমেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০ শতাংশ নারীদের চাকরির সুযোগ করে দেই। কারণ নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি দরকার।
এ সময় সরকার নারীর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য পাঁচ জন নারী ও তাদের পরিবারের হাতে বেগম রোকেয়া পদক ২০১৯ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
রোকেয়া পদকপ্রাপ্তরা হলেন-বেগম সেলিনা খালেক নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে; অধ্যক্ষ শামসুন নাহার নারী শিক্ষায় ও ড. নুরুননাহার ফয়জননেসা (মরণোত্তর) নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য; পাপড়ি বসু নারীর অধিকার ও বেগম আখতার জাহান নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পদক পেলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ দেওয়ার জন্য পাঁচজন বিশিষ্ট নারী ব্যক্তিত্বকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।