স্টাফ রিপোর্টারঃ- জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলা, সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে একব্যক্তি নিহত ও পুলিশের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকায় এই সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল করিম(৩৪)। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ আকবর শাহ থানার উপ–পরিদর্শক (এস আই) মোস্তাফিজুর রহমানকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। নিহত আব্দুল করিম বাদশা মিয়া কলোনীর মৃত আবু সুফিয়ানের ছেলে।গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আকবর শাহ থানার অগ্রণী ব্যাংক সোসাইটির পাশে বাদশা কলোনীর ফারুক চৌধুরী মাঠে এ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, ডা. কিবরিয়া ও হোসেন মুরাদ নামে দুই ব্যক্তি তাদের বেশ কিছু প্লট বিক্রয় করেন। হোসেন মুরাদ এর প্লটের ক্রেতারা প্লটে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করতে চাইলে ডা. কিবরিয়ার কাছ থেকে প্লট ক্রয় করা ক্রেতারা তাতে বাধা দেয়। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেশীয় অস্ত্র (এলজি) ব্যবহার করা হয়েছে। দু’পক্ষের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
ওসি বলেন, ফারুক চৌধুরী মাঠ সংলগ্ন একটি জায়গা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল এবং বিষয়টি লিখিতভাবেও থানায় অভিযোগ করা হয়। সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার পর তাদের ওপরও হামলা চালায় এক পক্ষ। এতে এসআই মোস্তাফিজুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন।
আহত অবস্থায় থাকা আকবর শাহ থানার উপ–পরিদর্শক (এস আই) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখতে পান দুই পক্ষে ৫০–৬০ লোক জড়ো হয়েছে। উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা উত্তেজনা চলছিল। এসময় আমি নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলে উভয়পক্ষকে শান্ত করে কিছুদূর আসার পর আবার উত্তেজনা, চিৎকার ও চেঁচামেচি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে দুই পক্ষ। পাল্টাপাল্টি গুলিও ছুঁড়ে তারা।
এসময় একটি গুলি তার ঘাড়ে এসে লাগে। এছাড়া সংঘাতের সময় উভয়পক্ষ পরস্পরের প্রতি গরম তেলও নিক্ষেপ করে। গরম তেল ছিটকে পড়ে এস আই মোস্তাফিজের শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
‘এসআই মোস্তাফিজুর রহমানের ঘাড়ে দেশীয় এলজি’র গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি দেশি এলজির বুলেট।তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে একজনের মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তিনি মারামারিতে নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। এই ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা ও হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।