সিটিনিউজবিডিঃ কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মো. হাসান আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে (ফায়ারিং স্কোয়াড) দণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
মানবতাবিরোধী অপরাধে এর আগে মৃত্যুদণ্ডের একাধিক আদেশ দেওয়া হলেও এবারই প্রথম ফাঁসি অথবা গুলি করে দণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিলেন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার দুপুরে পলাতক এ মানবতাবিরোধী অপরাধীকে ফাঁসির রায় দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১। এর আগে সকাল সোয়া ১১টার দিকে ১২৫ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জে হত্যা, অপহরণ, আটক, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ছয়টি অভিযোগ ছিল হাসান আলী আলীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
গত ২০ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় (সিএভি) রাখা হয়েছিল।
হাসান আলীর বিরুদ্ধে আনা ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ২, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে ১ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ওই অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
হাসান আলীর বিরুদ্ধে গত বছরের ১১ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়। ২১ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ। হাসান আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে না পারায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে তাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয় প্রসিকিউশন। এরপরও তিনি হাজির না হওয়ায় হাসান আলীর অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চালানোর নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আবদুস শুকুর খানকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল।
হাসান আলীর বাবা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিন একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও কিশোরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলা হয়, হাসান আলী একাত্তরে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। বাবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অখণ্ড পাকিস্তানের ধারণা মাথায় নিয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসান আলী হিন্দু ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
এ বিভাগের আরও খবর