আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি নেই বাজেটে : সিপিডি

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনো দিকনির্দেশনা নেই উল্লেখ করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন ‘এ বাজেটে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো সঙ্গতি নেই। এটা একটা আর্থিক ভ্রম।’

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে পর্যালোচনা তুলে ধরতে সিপিডির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই সংশয় প্রকাশ করা হয়। সিপিডির পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

গতকাল জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯১ কোট টাকা। এর মধ্যে এনবিআর কর দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, এনবিআর বহির্ভূত কর-রাজস্ব আট হাজার ৬২২ কোটি টাকা ও কর ব্যতীত প্রাপ্তি ৩১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু এর আয় ও ব্যয়ের কাঠামোর মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো বলেন, সাত দশমিক চার শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যক্তি খাতে ৬৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার আর সরকারি খাতে দরকার ৫০ হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র প্রসাশনিক কাঠামো দিয়ে বাজেটে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সহায়তা দরকার। জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কিন্তু আমরা তা দেখছি না। এছাড়াও বাজেটে এডিপি বাস্তবায়নে সুর্নিদিষ্টি কোনো দিক নির্দেশনা নেই।

গতকাল সংসদে অর্থমন্ত্রীর পেশ করা প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ঘাটতির ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা আসবে বৈদেশিক উৎস থেকে আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে আসবে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটে ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আমাদের আশ্চার্য করেছে। কারণ ২০১৬ সালে আমাদের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আসে যার পরিমাণ মাত্র ২৭ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও বৈদেশিক ঋণ ব্যয় করতে পারছে না। তারপরও সরকার কিভাবে প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হল তা জানি না। তাই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে সিপিডি।

এই অর্থনীতিবদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের সরকারি বিনিয়োগ বড় ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ উন্নীত করতে হবে। অর্থনীতির সঙ্গে বাজেটের আকারও বাড়াতে হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাজেটের আকার বাড়ানো জন্য যে সক্ষমতার প্রয়োজন তাতে ঘাটতি আছে বলে আমরা মনে করি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ সংস্থার অন্য গবেষকরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.