চট্টগ্রাম শহরে নতুন খাল খনন প্রকল্প এবং বিল্ডিং রক্ষার বাণিজ্য

0

জুবায়ের সিদ্দিকী : নতুন খাল খনন প্রকল্পে (চট্টগ্রাম শহরের বাড়াইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত) ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত মসজিদ, কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষা বাস্তবায়ন জরুরী না বিল্ডিং রক্ষা জরুরী এ ব্যাপারে চসিক, সিডিএ, এলএ শাখার (অধিগ্রহণ শাখা) ৫/১০/২০১৬ ইং তারিখে নতুন পদক্ষেপে পূর্বের বাদ দেয়া মসজিদ, কবরস্থান ইত্যাদিকে পুনরায় অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত করে লাল পতাকা লাল দাগ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ ও ভিডিও করা এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট মসজিদের মুসল্লি ও মসজিদ কমিটিকে উৎকন্ঠা, উদ্বেগ ও ভাবনায় ফেলে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, খাল খননের প্রকল্প মে ২০১৬ ইং তে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পূর্বে যৌথ টিম চসিক, সিডিএ ভূমি অধিগ্রহণের সীমানা, ভূমির দাগ, মৌজা, খতিয়ান ইত্যাদি এক বছর ধরে অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সার্ভে করার পর এবং জয়েন্ট ভেরিফিকেশন রিপোর্টসহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এবং প্রেরিত ছকে পত্রকে অফিস কপি সংরক্ষিত রেখে এবং এল এ (অধিগ্রহণ শাখা) কপি দিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এপ্রিল ২০১৬ ইং চসিক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সন্তুষ্ট হয়ে ( মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, স্কুল ইত্যাদি বাদ দিয়ে ) মে ২০১৬ ইং তে প্রেরিত ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাবে চুড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করে।
নতুন খাল খননের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশাসনিক চুড়ান্ত অনুমোদন প্রাপ্ত ভূমি অধিগ্রহণ সীমানায় বিল্ডিং রক্ষার জন্য বিল্ডিং মালিকেরা যৌথ টিমকে (চসিক, সিডিএ, এলএ শাখা) ভুল তথ্য দিয়ে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। ফলশ্রুতিতে খাল খনন প্রকল্প এখন বিল্ডিং রক্ষার প্রকল্পে পরিণত হতে চলেছে। এই প্রচেষ্টা এখনী বন্ধ না করলে খাল খনন প্রকল্প জটিল থেকে জটিলতর হয়ে বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে অনেকে। এলাকার মানুষ বলাবলি করছে, চট্টগ্রাম শহরে নতুন খাল খনন হচ্ছে নাকি বিল্ডিং রক্ষার প্রকল্প হচ্ছে ?
মে ২০১৬ ইং মন্ত্রণালয়ের চুড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদনের ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে- যেখানে খাল খননের প্রাক্কলিত ব্যায় ৩২৬ কোটি টাকার বরাদ্দের অপেক্ষায় এলাকাবাসী সেখানে খাল খনন ১০৫ ফুট না করে আরও ছোট করা, সিডিএ প্ল্যান অনুযায়ী বিল্ডিং রক্ষা করা এবং খাল খননে ২০০/৩০০ বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভুয়া তথ্য দেওয়া ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা আত্মঘাতী হচ্ছে বলে সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করে।
তাছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের চুড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদনে পুরানো, প্রতিষ্ঠিত ও সরকার কর্তৃক অনুদানপ্রাপ্ত ‘‘মসজিদে আম্বিয়া’’কে অধিগ্রহণ থেকে বাদ দেওয়ার পরও মসজিদ পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করে বিতর্ক করা অশুভ আলামতের চক্রান্ত বলে সংশ্লিষ্ট মসজিদের মুসল্লি, মসজিদ কমিটি ও সচেতন এলাকাবাসী মনে করছে। ফলশ্রুতিতে সরকারের ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে। ধর্ম ব্যবসায়ী ও স্বাধীনতা বিরোধীকারীরা উৎসাহিত এবং লাভবান হবে।
অভিজ্ঞ মহল বলছেন, একটু ধৈর্য্য ধরলে টাকা বরাদ্দ ও খাল খননের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করবেন। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে সবসময় উপর আস্থা রাখতে বলেন। উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দোহাজারী থেকে গুমদুম পর্যন্ত রেললাইনের মেয়াদ ও ব্যয়বৃদ্ধি নতুন করে অনুমোদন দিয়েছেন। সুতরাং নতুন করে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদনের বিরুদ্ধে গিয়ে লাল পতাকা ও লাল রং দিয়ে সীমানা নির্ধারণ ( ৩য় বারের মত) ও ভিডিও করে বিতর্ক সৃষ্টি করে বিল্ডিং রক্ষা বাণিজ্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মচারীদের দূর্নীতি করার সুযোগ দেয়া বর্তমান প্রেক্ষিতে মোটেই সমীচিন হবে না। মন্ত্রণালয়ের চুড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদন অনুযায়ী নতুন খাল খনন বাস্তবায়নের জন্য টাকা বরাদ্দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এখন কাম্য, এতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সাথে চসিকের বিরোধও সৃষ্টি হবে না পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীও সন্তুষ্ট হবে এবং একটি সুন্দর সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে সূধী মহলের অভিমত।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.