হামের টিকা না নেয়ায় সীতাকুণ্ডে ৯ শিশুর মৃত্যু

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মধ্যম সোনাইছড়ির ত্রিপুরাপাড়া নয় শিশুর মৃত্যুর কারণ হাম বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

সেই সঙ্গে বাঙালিদের সঙ্গে ত্রিপুরাদের মিশনে না চাওয়াকেও একটি কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি।

সোমবার বিকেলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন আবুল কালাম আজাদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মৃত ও হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছে যে এসব শিশু হামের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত।

তবে বাংলাদেশে আবার হাম ফিরে আসছে কিনা, এতে ভয় পাবার কিছু নেই, তারা কখনো টিকা নেয়নি বলে এমনটা হয়েছে।’

‘এই পাড়ার কোনো মানুষ সরকারি স্বাস্থ্য সেবা পায় না কারণ তারা বাঙ্গালীদের সাথে মিশতে চায় না। আমরাও তাদের সবার সম্পর্কে জানি না। আর এখানকার শিশুদের কোনো দিন কোনো টিকা দেওয়া হয়নি’- এমন মন্তব্যও করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

আজাদ বলেন, ‘ওই পাড়াতে ৮৫টি পরিবার আছে এবং ৩৮৮ বাসিন্দা আছে। এদের এখনো কেউ হামের টিকা পায়নি।’

গত ৮ জুলাই পাহাড়ি টিলায় অসুস্থতার কারণে একটি শিশুর মৃত্যু হয়। পরদিন নয় জুলাই আরও দুইজন শিশু মারা যায়। সম্প্রাদায়গত প্রথা হিসেবে তারা এটিকে বালা মনে করে ভীত হয়ে ওই রাতে মশাল জ্বালিয়ে প্রার্থনা করেন। পরদিন কোন শিশুর মৃত্যু না হওয়াতে তারা মনে করেন প্রার্থনা কাজে লেগেছে।

কিন্তু একদিন পর ১১ জুন আরও একজন শিশু মারা যায় এবং ১২ জুন একই দিনে চারজন শিশু মারা যায়।সম্প্রদায়টির কয়েকজন তরুণ পাশের বাঙালিদেরকে জানালে তারা সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানান। এরপর তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

ত্রিপুরা পাড়ায় টিকা না দেয়া কাদের ব্যর্থতা-এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, কিন্তু ত্রিপুরাদের মতো কিছু কিছু পাহাড়ি আছে যাদের সম্পর্কে আমরা জানি না। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমরা শিক্ষা নিয়েছি এবং মাঠ পর্যায়ের লোকেরা কোন ধরনের অবহেলা করেছে কিনা তার জন্য এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছি।’

এখন থেকে পাহাড়িদের কাছে নিয়মিত সেবা নিয়ে যাওয়ার আশ্বস দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই মহাপরিচালক।

আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সাবরিনা, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দীকী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরিচর্যা) এ বি এম জাহাঙ্গীর আলম, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.