নিজস্ব প্রতিবেদক::চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৫ম পরিষদের ২০ তম সাধারণ সভা সোমবার (২০ মার্চ) সকালে কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নির্বাচিত পরিষদের সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, অফিসিয়াল কাউন্সিলর সহ সিটি কর্পোরেশনের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সভার সভাপতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নাগরিকদের উপর ট্যাক্স ধার্য্য করার কোন এখতিয়ার বা ক্ষমতা মেয়রের নেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক ধার্য্যকৃত এবং গ্যাজেট দ্বারা প্রকাশিত ট্যাক্স আদায় করার ক্ষমতা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রয়োগ করে মাত্র। অতি সম্প্রতি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও বিশেষ মহল জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি,ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার লক্ষে এবং সরকারের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে নানামুখি অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। যার কারনে সরকারের ভাবমুর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ করার নৈতিক দায়িত্বের অংশ বলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মনে করে বিধায় সংশ্লিষ্ট বিশেষ মহলটির মন মানসিকতা পরির্তন করা প্রয়োজন বলে সিটি কর্পোরেশন মনে করে। সবার জন্য বাসোপযুগি নগর গড়ার প্রত্যয়ে দায়িত্ব পালন করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
তিনি বলেন, সময় নির্ধারন করে নগরীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে হোল্ডিং ট্যাক্স মেলার আয়োজন করা হবে। সেখানে সকল শ্রেনী ও পেশার নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়াও হোল্ডিং ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে জনমনে কোন ধরনের বিভ্রান্তি বা প্রশ্ন থাকলে অথবা কোন অসংগতি থাকলে তা নিরসনে ৪১ টি ওয়ার্ডে পৃথক পৃথকভাবে জনসচেতনতা মূলক সমাবেশ করা হবে।
মেয়র বলেন, দরিদ্র হতদরিদ্র জনগোষ্টি হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়াও সরকারের গ্যাজেটে মুক্তিযুদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তাও অনুসরন করা হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক আয়োজিত জনসমাবেশে করদাতাগণ যাবতীয় বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পাবে। নগরীকে মাদকমুক্ত এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র সহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা নিরসনে জনমত গঠন এবং জঙ্গী প্রতিরোধ কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। মেয়র বলেন, সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের ছুটির ক্ষেত্রে মেয়রের পূর্ব অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এবং আইনের বিধি বিধান অনুযায়ী স্ব স্ব দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হবে। নিরাপদ নগরী নিশ্চিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম নগরবাসীর প্রশংসা অর্জন করছে। এ কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে। চলমান ১৯ ওয়ার্ডে ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ অপসারন কার্যক্রম নিবিড় পর্যবেক্ষনের জন্য কাউন্সিলরদের অনুরোধ করেন মেয়র। তিনি বলেন, ১ এপ্রিল থেকে বাকী ২১ টি ওয়ার্ডে ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারন কার্যক্রম শুরু করা হবে।
মেয়র বলেন, ডোর টু ডোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৭ শত টি ছোট বিন, ২ হাজার ৩ শত ১০ টি বড় বিন, ৬ শত ৩০ টি ভ্যান গাড়ী এবং ৯ শত ৯৩ জন বিন শ্রমিক কাজে নিয়োজিত থাকবে। আ জ ম নাছির উদ্দীন ৪৭ তম মহান স্বাধীনতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে সকল কাউন্সিলরদের সহযোগিতা কামনা করেন। সভায় সিটি কর্পোরেশনের বিধি বিধান আইনের ভিত্তিতে চলমান ট্যাক্স পূনঃ মুল্যায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ মহল কর্তৃক মিথ্যা অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর কার্যক্রমের নিন্দা করা হয়। সভায় এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। দামপাড়া সিটি কর্পোরেশন সিএনজি ফিলিং ষ্টেশন গতিশীল করা, সিটি কর্পোরেশনের বৈদ্যুতিক লাইনে ডিজিটাল মিটার স্থাপন ও ৪১ টি ওয়ার্ডকে পরিপূর্ণ আলোকায়ন করা, বর্ষার পূর্বে নালা নর্দমা দ্রুত সংস্কার করে পানি চলাচলের উপযুগি করা, ৪১টি ওয়ার্ডে আধুনিক যাত্রী ছাউনি নির্মাণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত সাগরিকা গরুর বাজার সংলগ্ন শপিং কমপ্লেক্সে কক্ষ বরাদ্দ সংক্রান্ত নতুন চুক্তি প্রণয়ন, ৩য় ও ৪র্থ তলার অর্ধেক অংশ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার, যৌতুক ও নারী বিরোধী নির্যাতন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অটোমেশন কার্যক্রম গতিশীল করা, আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করা, নগর পরিকল্পনা উন্নয়ন, স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে বিউটিফিকেশন কার্যক্রম তদারকি করা, ফ্লাওয়ার বেড স্থাপন, ওয়ার্ড পর্যায়ে পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার মান উন্নয়ন করা, মাদকের ব্যবহার শূন্য পর্যায়ে আনার লক্ষে জনমত গঠন করা, জঙ্গী প্রতিরোধ কমিটিগুলো সক্রিয় করা, ই-টেন্ডার কার্যক্রম আরো আধুনিকায়ন করা সহ বিবিধ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।