নিজামীর রিভিউ আবেদনের আদেশ আজ

ঢাকা :একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদনের চূড়ান্ত রায় দেয়া হবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায়। নিজামীর করা রিভিউ আবেদনের ওপর মঙ্গলবার (৩ মে) উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিনই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।

বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন― বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর আগে মঙ্গলবার (৩ মে) প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী নিজামীর রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নিজামীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এ দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

এ সময় প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বলেন, ‘তিনি (নিজামী) মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন, এটি তার অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়?’ জবাবে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য তার বিচার হচ্ছে না। বিচার হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘যদি দেশীয় দোসররা সহযোগিতা না করতো তাহলে পাকিস্তানি আর্মিরা যুদ্ধে দুই মাসের বেশি টিকতে পারতো না।’ খন্দকার মাহবুব এ সময় আদালতকে বলেন, ‘দালাল আইনে নিজামীর বিচার হচ্ছে না। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিচার হচ্ছে।’
তাই নিজামীর আইনজীবী আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রাষ্ট্রপক্ষে নিজামীর আবেদনের বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। কেন নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা উচিত সেসব বিষয় তুলে ধরেন। এবং আশা প্রকাশ করেন অপরাধ বিবেচনায় নিজামীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রিভিউতেও বহাল থাকবে।

এর আগে আপিল বিভাগে বহাল থাকা মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ২৯ মার্চ রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন নিজামী। পরে রিভিউ দ্রুত শুনানির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ৩০ মার্চ চেম্বার বিচারপতি কাছে আবেদন করে। এর মধ্যে বাংলা নববর্ষ, দুই সপ্তাহ অবকাশ, সাপ্তাহিক ছুটি ও মে দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট ১৭ দিনের ছুটি ছিল। ছুটি শেষে সোমবার আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। নিয়মিত বেঞ্চের কার্যক্রম শুরুর পর ৩ মে নির্ধারিত দিনেই কার্যতালিকায় আসে নিজামীর আবেদনটি। সেদিনই ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ৫ মে রিভিউ আবেদনটি রায়ের জন্য রাখা হয়।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চলতি বছর ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.