চন্দনাইশ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ভুয়া বিল উত্তোলন

0

নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ:: চন্দনাইশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্ত্া সেলিনা আকতার মোটর সাইকেল ব্যবহার না করে ফুয়েল ও মেরামতের ৫ হাজার ২ শত টাকা ভুয়া বিল উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অফিসে দেরীতে আসার অভিযোগসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।

জানা যায়, চন্দনাইশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আকতার মোটর সাইকেল ব্যবহার না করেও গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পিইডিপি-৩ এ আওতায় জুলাই/১৭ হতে ডিসেম্বর/১৭ পর্যন্ত মোটর সাইকেলের পেট্রোল বিল (ভাউচার ১-৩) মূলে ৪ হাজার ২ শত টাকা, একইভাবে মোটর সাইকেল মেরামত বাবদ আনুষাঙ্গিক বিল (ভাউচার-১) মূলে ১ হাজার টাকাসহ ৫ হাজার ২ শত টাকার বিল বিগত ২১ জানুয়ারি’১৮ তারিখ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা করে উত্তোলন করেন। একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, তিনি অধিকাংশ সময় অপরাহ্নে অফিসে আসার কারণে শিক্ষকদের বিভিন্ন বিল ভাউচারের অর্থসমূহ যথাযথ সময়ে পাচ্ছেন না। চলতি বছর শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুলে ভরা সিলেবাস দিয়েছেন প্রথম সাময়িক পরীক্ষার মাত্র ২৭ দিন আগে গত ২৭মার্চ। ৪র্থ শ্রেণীর সিলেবাসে ইংরেজি বিষয়ে মানবন্টন, প্রশ্নেরধারায় ব্যাপক ভুল পরিলক্ষিত হয়। একই ভাবে ৫ম শ্রেণীতে ইংরেজি বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়ে নিয়ম বর্হিভুতভাবে প্রশ্নের ধারা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বলে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারের দেয়া বিনা মূল্যে বই বিতরণের সময় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১ শত টাকা, কেজি ও এনজিও পরিচালিত বিদ্যালয় থেকে আড়াই থেকে ৩ শত টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অথচ সরকার বই পরিবহনের জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪শত টাকা প্রদান করে থাকেন।

সহকারি শিক্ষক নাজিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি একবছর আগে যোগদান করলে ও কার্যদিবসের একদিন ও ১২টার আগে কর্মস্থলে আসতে পারেন নাই। বিষয়টি শিক্ষকেরা স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি তদন্ত করে এ সত্যতা পান। তাছাড়া গত ২ মাস আগে মাসিক সমন্বয় সভায় তিনি সংসদ সদস্য মহোদয়ের উপস্থিতির পরে উপস্থিত হওয়ায় সংসদ সদস্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষকেরা অফিসে গেলে তিনি অশোভন আচরণ ও দুর্ব্যবহার করে থাকেন। তাছাড়া শিক্ষকদের যেকোন একটি কাজের জন্য কমপক্ষে ৪/৫ বার অফিসে যেতে হয়। চলতি বছর শিক্ষার্থীদের ভুলে ভরা সিলেবাস ৩ মাস পরে সরবরাহ করলেও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো সিলেবাস শিক্ষার্থীদের নিকট পৌছেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় ভুলে ভরা প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কথা বিভন্ন প্রচার মাধ্যমে উঠে আসে। তিনি বিগত এক বছরে শিক্ষকদের প্রাণের দাবী সার্ভিস বুক হালফিলের কোন কাজ করেননি। বিগত একবছরে বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান, উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও বঙ্গবন্ধু – বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্ণামেন্টে তার উস্থিতি মিলেনি।

এসকল অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিনা আখতার বলেছেন, তাঁর নিজস্ব মোটর সাইকেল না থাকলেও তাঁকে ভিজিটে যেতে হয়। তাছাড়া তিনি মোটর সাইকেল চালাতে পারেন না বলেও স্বীকার করেন। সিলেবাস তৈরি করতে বিলম্ব হয়েছে, তাছাড়া সিলেবাসের ত্রুটি-বিচ্যুতিও দেখার সুযোগ হয়নি বলে জানান। অফিসের পিয়নদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের কারণে চা-নাস্তা খাওয়ার জন্য তারা সামান্য টাকা নিয়েছে। অফিসে বিলম্বে আসার ব্যাপারে তিনি বলেন, শহর থেকে আসতে হয়, মহিলা মানুষ, তবে ১০টার থেকে একটু দেরিতে আসে বলে স্বীকার করেন। সহকারি শিক্ষক নাজিম উদ্দিন নিজের স্বার্থে এসকল মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.