চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ-সেনাবাহিনীর স্বাক্ষর
গোলাম সরওয়ার,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণে তলিয়ে যায় শহরের অলিগলি। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় নগরজুড়ে। পানিবন্দি হয়ে পড়ে নগরবাসী। চট্টলদরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামবাসীকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
সোমবার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে র্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এক সমঝোতা (এমওইউ) স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন।
নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)।
আবদুচ ছালাম বলেন,‘গত বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টি ও জোয়ারের কারণে চট্টগ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। সেই দৃশ্য আমরা সবাই দেখেছি। ওই সময় এমন ভয়াবহ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে, তখন মানুষকে বলতে শুনেছি চট্টগ্রাম অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামে আর বসবাস করা যাবে না। তাদের সেই সন্দেহ, তাদের সেই আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে এসেছেন চট্টগ্রামের অভিভাবক হিসেবে। নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সিডিএ মেগা এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ প্রকল্পের খোঁজখবর নিয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। সেই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এগিয়ে এসেছেন। আমি সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।পাশাপাশি ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে চসিক মেয়র আ জ ম নাছিরসহ চসিকের কাউন্সিলরদের সহযোগিতা চান সিডিএ চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান। সেনাবাহিনীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্টের জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ডিজিএফআই চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আদিল চৌধুরী।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ ৮ হাজার কোটি টাকায় দুইটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের ধারণা ছিল জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর নেওয়া এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে কি না, বাস্তবায়ন হবে কি না? জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে কি না? সেই ধারণাকে পাল্টে দিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে এসেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে, চট্টগ্রামের মানুষকে ভালবেসে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এগিয়ে এসেছেন সেনাবাহিনীও। ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। প্রধানমন্ত্রী আসবেন, যাবেন; কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো চট্টলদরদী প্রধানমন্ত্রী আর পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন আবদুচ ছালাম।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্রিগেডের উপ-মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহরিয়ার আহমেদ, উপ-মহাপরিচালক, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড। অন্যদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রকৌশলী হাসান বিন শামস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম।