পহেলা বৈশাখকে ঘিরে ইলিশের দাম চড়া

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: জাটকা রক্ষা ও ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে চাঁদপুরসহ দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদফতর।

তবুও বৈশাখকে ঘিরে বাজারে আসছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ। দামও আকাশচুম্বী। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পহেলা বৈশাখকে ঘিরে রমরমা বাণিজ্য হয় ইলিশের। তাই নদী থেকে অবাধে ধরা হচ্ছে ইলিশ, পাশাপাশি হিমাগারে সংরক্ষণ করা ইলিশও বাজারে আসছে।

এ বিষয়ে মৎস্য অধিদফতরের জাটকা সংরক্ষণ ও গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক এবিএম জাহিদ হাবিব বলেন, মার্চ ও এপ্রিল দেশের বিভিন্ন অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। তবে ওই এলাকার বাইরে ইলিশ ধরা যাবে। মূলত সেসব এলাকা থেকেই বাজারে ইলিশ আসছে। কিন্তু জাটকার ক্ষেত্রে বিষয়টি অবৈধ। কারণ সব স্থানেই এ সময় জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ।

সরেজমিন রাজধানীর পুরান ঢাকার নয়াবাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার, মালিবাগ বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। বড় আকারের ইলিশের সঙ্গে মাঝারি, ছোট ও জাটকা মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে এসব বাজারে। মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা হিমাগারে সংরক্ষণ করা ইলিশ বিক্রি করছেন। পাশাপাশি নদী থেকে ধরা ইলিশও আসছে প্রচুর, যা বাজারে তাজা মাছ হিসেবে আরও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারে ইলিশ বিক্রেতা রবিউল ইসলাম  বলেন, ইলিশের বাজারে বৈশাখের উন্মাদনা চলছে। অনেকেই ইলিশ কিনতে শুরু করেছেন। তাই দাম একটু বেশি। তবে বড় ইলিশের তুলনায় ছোট ও মাঝারি ইলিশের চাহিদা বেশি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বড় আকারের এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকায়। তবে দুই সপ্তাহ ধরে এই আকৃতির ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৩শ’ থেকে ১৪শ’ টাকায়। ৮০০ গ্রাম ওজনের এক পিস বিক্রি হয় এক হাজার টাকায়, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮০০ টাকায়। ৭০০ গ্রাম ওজনের এক পিস ইলিশ বিক্রি হয় ৭০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়। ৫০০ গ্রাম ওজনের এক পিস ইলিশ বিক্রি হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জাটকাও বিক্রি হচ্ছে অবাধে, যা কেজিপ্রতি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

এদিকে মঙ্গলবার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির দৈনিক বাজার মূল্যতালিকায় সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম বাড়তে দেখা গেছে। সেখানে মঙ্গলবার এক কেজি ইলিশের দাম দেয়া আছে ৭০০ থেকে ১৮শ’ টাকা, যা গত সপ্তাহে দাম ছিল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা। আর এক মাস আগে এর দাম দেয়া আছে ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেক্ষেত্রে মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৯২ দশমিক ৩১ শতাংশ।

কারওয়ান বাজারের আড়তদার খালেদ মিয়া  জানান, অভয়াশ্রমের বাইরে ইলিশ শিকার চলছে। পাশাপাশি নিষিদ্ধ এলাকায়ও অবৈধভাবে জাল ফেলছেন জেলেরা। সেসব ইলিশই সরাসরি জেলেদের কাছ থেকে কিনে স্থানীয় ও শহরের বাজারে তুলছেন কিছু ব্যবসায়ী।

ক্যাবের সভাপতি ড. গোলাম রহমান  বলেন, বৈশাখে ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে অনেক জেলে অবৈধভাবে ইলিশ শিকার করছেন। তিনি আরও বলেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খেতে হবে, এটা কোনো গ্রন্থে লেখা নেই। তবুও সাধারণ ভোক্তারা বিলাসিতার কারণে এই পান্তা-ইলিশ খেয়ে থাকেন, যা কখনোই কাম্য নয়।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.