বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রা!
সিটি নিউজ ডেস্ক :: জরাজীর্ণ পুরাতনকে সরিয়ে নতুনের আহ্বানে সাড়া দিতে এবং সবার মধ্যে মানবতাবোধ জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি সবার মঙ্গল কামনায় প্রতিবছরের মতো এবারও হয়েছে বর্ষবরণের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে শুরু হয়ে রমনা বটমূলে গিয়ে শেষ হয় এই শোভাযাত্রা। সকালে আয়োজন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার।
সবার মধ্যে মানবতাবোধ জাগিয়ে তুলতে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য- ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ নেয়া হয়েছে লালন সাঁইজির গান থেকে।
শোভাযাত্রার পুরোভাগে থাকা পাখি ও ছানা, হাতি, মাছ ও বক, জাল ও জেলে, মা ও শিশু এবং গরুর আটটি ফর্ম ছাড়াও যোগ হয়েছে টেপা পুতুলের ছেলে ফর্ম ও মহিষ।
রাজধানী ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকাতেও চারুকলা ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় স্কুল বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয় এই শোভাযাত্রা।
তিন দশক ধরে বর্ষবরণের অন্যতম আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের শোভাযাত্রার স্লোগান ঠিক করা হয়েছে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।’
শোভাযাত্রাকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চললেও এর কোনো প্রভাব পড়েনি। এসব অপপ্রচারে কান না দিয়ে লাখো মানুষ শোভাযাত্রায় সমবেত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ এতে অংশ নিয়েছে।
প্রতিবারের মতো এবারও নানা ধরনের জীবজন্তুর বিশালাকারের প্রতিকৃতি নিয়ে বের হয়েছে এই শোভযাত্রা। এছাড়া রয়েছে হরেক রঙের হাতি, বাঘ, ফুল, পাখির প্রতিকৃতি।
নারীরা পরেছেন লাল, সাদা শাড়ি। হাতভর্তি কাঁচের চুড়ি। চুলে বেলি ফুল। শিশুরাও সেজেছে লাল, সাদার সাজে। পুরুষদের সাজও তাই। বাংলার চিরায়ত সাজে নববর্ষ বরণ করছে সবাই।
১৯৮৬ সালে পয়লা বৈশাখে যশোরে একটি সংগঠন এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। তিন বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এরপর বছর বছর এর পরিসর বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের অংশগ্রহণ।
বাঙালির প্রাণের এ উৎসব উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠনও পৃথকভাবে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।