এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পায়ে হাঁটা কর্মসুচীতে হাজারো মানুষ

0

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান :: ২৪৩ বর্গকিলোমিটারের রাউজানে ১৬০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে নজির স্থাপন করলেন রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।

১৬ এপ্রিল থেকে আজ ১৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪ দিনের পায়ে হাটা কর্মসুচিতে অংশ নেয় আওয়ামীলীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ সহ হাজার হাজার সাধারন জনসাধারন।

দেখাগেছে শরীরে সেচ্ছাসেবকের মতো হাতকাটা গোলাপী জামা, মাথায় গোলাপী রংয়ের ক্যাপ (টুপি)। জামা আর টুপিতে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ছবি শোভা পাচ্ছে।

কেউ কেউ কাঁধে ঝুলিয়েছেন প্রয়োজনীয় জামা কাপড় ও ঔষধপত্রের ব্যাগ। কারো মাথায় দেখা গেল দু’একটা রংবেরঙের ছাতা। ছুটে চলেছেন সামনের দিকে ফজলে করিম এমপি। তাকে অনুসরণ করে তার পেছনে হাঁটছেন শত শত নেতাকর্মিও। কখনো মহা সড়ক, কখনো অভ্যন্তরীণ, কখনো গ্রামের ফসলী জমিকে দু’ভাগ করে যাওয়া পথ (স্থানীয় ভাষায় আইল) দিয়ে তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে হেঁটেই চলেছে।

বিয়েবাড়ির মতোই রাস্তার দু’পাশে সুসজ্জা, দু’ধারে হাজার হাজার নারী পুরুষ। কারো হাতে তৃষা বৈশাখের তাপদাহ নিবারণের লেবুর শরবত, কারো ডাবের পানি, কারো হাতে মৌসুমী ফল, কারো কারো হাতে নানা রকমের পিঠাপুলি। গরমে দীর্ঘপথ মাড়িয়ে চলতে থাকা এমপি, তার সফর সঙ্গীদের একটু প্রশান্তি আর ক্ষুদা নিবারণের চেষ্ঠায় এই অপেক্ষা উৎসাহী নারী পুরুষের। এ যেন এক মহা উৎসব।

সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার এ দৃশ্যে দেখা গেছে রাউজানের পথপ্রান্তর এবং গ্রামের মেঠোপথে। রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ভিন্নধর্মী উদ্যোগ পায়ে হেঁটে রাউজান ঘুরে দেখা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মি, সাধারণ ও  উৎসুক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।

রাউজান পৌরসভার সীমান্ত এলাকা হালদা ব্রীজ চত্ত্বরস্থ চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক থেকে সোমবার সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে এ পায়ে হাঁটার যাত্রা শুরু হয়। এ মহা উদ্যোগের নাম আগেই দেয়া হয়েছিল ‘প্রাণের টানে পায়ে হেঁটে রাউজানের ঘরে ঘরে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি’ তথা পায়ে হেঁটে রাউজান ঘুরে দেখা কর্মসূচি।

টুপি ও বিশেষ জামা পরিধানের আড়াই শতাধিক নেতাকর্মি ছাড়াও শত শত নেতাকর্মি, সমর্থকদের এ পথযাত্রায় অংশ নেয়। সকাল দশটায় শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড, গহিরা ইউনিয়ন, নোয়াজিষপুর, চিকদাইর ইউনিয়ন, ডাবুয়া ইউনিয়ন হয়ে ‘প্রাণের টানে পায়ে হেঁটে রাউজানের ঘরে ঘরে’ যাত্রার বহরটি গহিরা হালদা ব্রীজ চত্ত্বর থেকে উপজেলার এক নম্বর ইউনিয়ন হলদিয়া ইউনিয়নে গিয়ে প্রবেশ করে সন্ধ্যা ৬টায়।

প্রথমদিনে এক পৌরসভা ও ওই পাঁচ ইউনিয়নের ৪০ কিলোমিটার পথ হেঁটে যান ফজলে করিম ও তার সঙ্গে থাকা দলীয় নেতাকর্মিরা। প্রথমদিনের হাঁটা কর্মসূচিশেষে ‘যেখানে রাত সেখানে কাত’ সে সূত্র ধরে হলদিয়া ইউনিয়ন  পরিষদ ভবনে সঙ্গীয় নেতাকর্মিদের নিয়ে রাতযাপন করে ফজলে করিম মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় আবারো পায়ে হেঁটে হলদিয়া হতে ডাবুয়া এরপর উপজেলা সদর,এরপর হরিসখান পাড়া  সড়ক হয়ে রাউজান ইউনিয়ন। সেখানে মধ্যাহৃভোজ সেরে হাটা দেন হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক হয়ে কদলপুর ইউনিয়নে। বিকাল যখন ৩টা ৪৫ মিনিট কালবৈশাখীর তীব্র বাতাস ও বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে হাটতে থাকেন। এরপর পাহাড়তলী ইউনিয়নের বিভিন্ন পথ ঘুরে সেখানে রাত যাপন করেন।

বুধবার পাহাড়তলী থেকে সকালে পুনরায় হাটা শুরু করে বাগোয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন পথ ও নোয়াপাড়ার বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে সন্ধ্যায় হালদা ঘেষা উরকিরচর ইউনিয়নে গিয়ে পৌছে। সেখানে রাত যাপন শেষে বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় হাটা দিয়ে পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন,পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন ও বিনাজুরী ইউনিয়ন হয়ে মোবারকখীল সড়ক দিয়ে রাউজান পৌরসভার গহিরা চেšহমুহনীতে এসে ৪ দিনের প্রাণের টানে পায়ে হাটা কর্মসুচি সমাপ্ত হয়।

রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন  ৪দিনে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে অতিক্রম করে নজির স্থাপন করলেন রেলপথ মন্ত্রনালয় সম্পর্কীত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। তিনি জানান রাউজানের এমপির কাছে অসম্ভব বলতে কোন শব্দ নেই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.