৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় নির্মিত হচ্ছে ডোমখালি সেতু

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিটি নিউজ :: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী ও মেয়রের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নগরীর ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডস্থ দাশপাড়ায় ডোমখালি সেতু নির্মিত হচ্ছে। পিসি গার্ডার ব্রিজটি দৈর্ঘ্যে ৩০.৫০মিটার, প্রস্থে ৯ মিটার।

৫ মে শনিবার সন্ধ্যায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বিএসসি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন যৌথ ভাবে ফলক উন্মোচন করে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

পরে এক সুধী সমাবেশ সেতু সংলগ্ন পাশের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।

উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মে র সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, শিক্ষানুরাগী ও আওয়ামীলীগ নেতা মুজিবুর রহমান।

উল্লেখ্য চান্দগাঁও ৪নং ওয়ার্ডে মাননীয় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র সুপারিশে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রায় ২১ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ ছাড়াও বর্তমান মেয়রের মেয়াদের মধ্যে প্রায় ৪৫ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। এ ছাড়াও প্রস্তাবিত ১২শত কোটি টাকার প্রকল্পে চান্দগাঁও ওয়ার্ডের জন্য ১০৪টি প্রকল্পের অধীনে ৩৮ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, অতীতে চান্দগাঁও ওয়ার্ডে এতোগুলো উন্নয়ন কাজ সম্পাদিত হয়নি। বর্তমান মেয়রের নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এখন থেকে চান্দগাঁও বাসী আর অবহেলিত থাকবে না। মন্ত্রী উদ্বোধন হওয়া ডোমখালি সেতুর নাম ‘আনারউল্লাহ শাহজী’ সেতু নামকরণ করেন।

সুধি সমাবেশে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি আরো বলেন, যারা মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসে না তাদের মধ্যে মমত্ববোধ নেই। যাদের মধ্যে মমত্ববোধ নেই তারা মানুষের পর্যায়ে পরে না। আলোকিত মানুষ গড়ার একমাত্র অবলম্বন শিক্ষার প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষাবান্ধব একটি সরকার। শিক্ষার গুনগত মান নিশ্চিত করার জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা ছাড়া উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিনত করা সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, তিনি যখন নারী শিক্ষা উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছিলেন তখন অনেকই তাকে গালমন্দ করেছিল। সকল বাধা অতিক্রম করে গড়ে তোলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে  প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

উদ্বোধক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে চান্দগাঁও ওয়ার্ড অনেক বড় ওয়ার্ড।

এ ওয়ার্ড থেকে অতীতে মন্ত্রী, মেয়র, এমপি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও কাংক্সিক্ষত উন্নয়ন এই ওয়ার্ডের নাগরিকবৃন্দ দেখেনি। ফলে পানির নিচে অথবা ভাঙ্গাচুড়া রাস্তায় পথ চলতে হতো। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে এ যাবত সময়ে ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডে ৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। মেয়র বলেন, চসিকে ১২শত কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ শীগ্রই অনুমোদিত হবে। এটি অনুমোদিত হলে ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডের ১০৪টি প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এতে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে।

দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মে র সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক বলেন, ৪নং ওয়ার্ড একটি অনুন্নত ও অবহেলিত ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মানুষের ভোটে অনেক মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু কেউ ভাবেন নি ওয়ার্ডটির কথা। ২০১৩ সালে ডোমখালি ব্রিজটি ভেঙে গেলে তা পুনরায় নির্মাণে বার বার টাকা বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাত করেছেন একটি চক্র। ফলে ব্রিজটি আর নির্মাণ হয়নি।

তিনি বলেন, এখন থেকে চান্দগাঁয়ের উন্নয়নের নেতৃত্ব দেবে মন্ত্রী ও মেয়র । তাদের নেতৃত্বে ও কাউন্সিলর সাইফুর নিরলস শ্রমে চান্দগাঁও একটি সমৃদ্ধ ও মডেল ওয়ার্ডে পরিণত হবে। তিনি আরো বলেন, পাঠাইন্না গোদার খালের পাশ গিলে খাচ্ছে অবৈধ দখলদাররা। তাদের দ্রুত উচ্ছেদে মেয়রের কাছে দাবি জানান। এছাড়া প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ও মাদক ব্যবসায়ীদের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান তিনি।

কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু বলেন, অতীতে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা এই ওয়ার্ডের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে। এখন এই ওয়ার্ডের দায়িত্ব নিয়েছেন মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বিএসসি ও  মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। আরো ৬০ কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ পেলে আগামী ২ বছরের মধ্যে এই ওয়ার্ডকে একটি সমৃদ্ধ ওয়ার্ডে পরিণত করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান বলেন, সিটি মেয়রের নেতৃত্বে চান্দগাঁওয়ের সমস্ত রাস্তাঘাট পাকাকরণ করতে চাই। এই ব্রিজটি যখন ভেঙে গেছে তখন তা দেখে এই এলাকার একজন অধিবাসী হিসেবে আমাকে দারুণ কষ্ট দিয়েছে। অনেক নেতা ব্রিজটি নির্মাণের আশ্বাস দিলেও আমরা নীরবে মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আদায়ে কাজ করেছি। আজ তা বাস্তবায়ন হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.