সিটিনিউজ ডেস্ক:: ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন দল সমর্থক ছাত্রলীগের ব্যাপকহারে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির অনুপ্রবেশের অভিযোগের মধ্যেই সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সংগঠনের সম্মেলনে দুই দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, মুরুব্বি সংগঠন আওয়ামী লীগের পরামর্শ ছাড়া কোনো কমিটি দেয়া হয়নি।
কোনো অন্যায় কাজে অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের আগামী দিনের নেতৃত্বে আসবে না বলে জানিয়েছেন সোহাগ। বলেন, ‘মেধাবী, সাহসী ও ত্যাগীরাই আগামীতে নেতৃত্বে আসবে।’
সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠনটির ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের দুই দিন আগে বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন সংগঠনের বর্তমান প্রধান।
শুক্রবার বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন সংগঠনের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর দ্বিতীয় দিন ১২ মে সংগঠনের নতুন নেতার নাম ঘোষণা করা হতে পারে।
ছাত্রলীগের গত তিনটি জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে ভোটে। তবে এই ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আছে ছাত্রলীগেই। কারণ, ভোটারদের নাম কখনও প্রকাশ করা হয় না। আবার অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগের কথিত সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটাররা ভোট দিয়েছে।
তবে এবারের সম্মেলনে সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ব্যর্থ হলেই ভোট হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আবার ছাত্রলীগের নেতাদের প্রধানমন্ত্রী জানান, গত কয়েক বছর ধরে ছাত্রলীগে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির অনুপ্রবেশের বিষয়টি সামনে আসার পর সম্ভাব্য নেতাদের বংশ পরিচয়ের বিষয়েও খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে। অনুপ্রবেশের পাশাপাশি বিতর্কিতরা যেন নেতৃত্বে আসতে না পারে সে জন্যই এই কৌশল নেয়া হয়েছে।
তবে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে সোহাগ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, ‘প্রতিটা কমিটি গঠনের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। মুরুব্বি সংগঠনের (আওয়ামী লীগ) পরামর্শেই আমরা প্রতিটা কমিটি গঠন করেছি। কোনো অনুপ্রবেশকারীকে কমিটি রাখা হয়নি।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ছাত্রলীগের নানা কর্মকাণ্ডে ক্ষমতাসীন দলকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ছাত্রলীগ নিয়ে তাদের নতুন ভাবনা আছে। এবার নতুন মডেলে হবে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ বলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা সুশৃঙ্খল সম্মেলন উপহার দেব। সারাদেশ থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সম্মেলনে উপস্থিত হবে।’
এক প্রশ্নে সোহাগ বলেন, ‘সিন্ডিকেট শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। ছাত্রলীগে এই শব্দটি কীভাবে এসেছে তা আমার জানা নাই। আমরা প্রতিটি কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই করার চেষ্টা করেছি। আগামীতে তার পরামর্শেই সব কার্যক্রম হবে।’
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নানা সময় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সোহাগ বলেন, ‘কাজ করলে ভুল হবে। ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের (সাংবাদিক)।’
‘আমরা যথার্থ কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমরা কতটুকু সফল এর মাপকাঠি আপনাদের হাতে। আমরা চেয়েছি ছাত্রলীগকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে।’
আরেক প্রশ্নে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, ‘সম্প্রতি একটি আন্দোলন নিয়ে (কোটা আন্দোলন) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা একটু ব্যস্ত ছিল। বিভিন্ন জেলার সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হতে না পারলেও জেলা আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই আমরা নতুন কমিটি গঠন করেছি।’