বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ঘোষণা দিয়েছেন তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর একটি মিছিল মধুর ক্যান্টিন, বিজনেস ফ্যাকাল্টি, বিজয় একাত্তর হল, বসুনিয়া, ভিসি চত্বর, শহীদ মিনার হয়ে কার্জন হলের দিকে যায়।

বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্বে দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বাযক রাশেদ খান, নূরুল হক নূর।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আর নয় কালক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘শেখ হাসিনার ঘোষণা, বাস্তবায়ন করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করছে শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রামের ষোলশহরে চবি শিক্ষার্থীরা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের লালবাগ ও কারমাইকেল কলেজ, বরিশাল, কুমিল্লা ও টাঙ্গাইল থেকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের সংবাদ পাওয়া গেছে।

এর আগে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে রবিবারের আন্দোলনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর। কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার বেলা ১১টায় সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে এবং বিক্ষোভ মিছিল চলাকালীন সময় ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল থেকে চারদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

এর পরেরদিন (৯এপ্রিল) সচিবালয়ে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক শেষে মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অত্যন্ত সুন্দর আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের (শিক্ষার্থী) বলেছি- ৭ মের মধ্যে সরকার বিদ্যমান কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। সেই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।

এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনও ৭ মে পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল রাতে আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়। তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ১০ এপ্রিল থেকে ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত আসার দাবি জানান।

পরে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে সব চাকরিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘোষণার পরেরদিন শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করে।

সর্বশেষ ১০ মে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান ‘কোটা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে’বলে জানালেও প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.