ভারী বর্ষণে অচল ঢাকা, ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত

0

সিটিনিউজবিডি : সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে প্রবল বর্ষণে ডুবে গেছে রাজধানী ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা।
প্রবল বর্ষণের কারণে মঙ্গলবার সকালে স্কুলগামী শিক্ষার্থী আর অফিসগামীদের পড়তে হয় মারাত্মক বিড়ম্বনায়। মারাত্মক জ্যামে স্থবির হয়ে যায় ঢাকা মহানগরী। রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর, কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, গ্রিনরোড, পূর্বরাজাবাজার, মিরপুর, খিলগাঁওসহ তুলনামূলক নিম্নাঞ্চলের সড়কে জলাবদ্ধতায় নানারকম ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ।

এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এক সতর্ক বার্তায় মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।

তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত মানে হলো- বন্দর ও বন্দরে নোঙ্গর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
তবে বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।

অপরদিকে সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবাহওয়া বিভাগ জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সঙ্গে বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ২০৪ মিলিমিটার। ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার।

১৮ নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে

দেশের উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
দেশের উত্তর, মধ্য ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ফেনী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, জামালপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে।

নদ-নদীর অবস্থার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮৫টি পানি সমতল স্টেশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনটি স্টেশনে অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। পানি বেড়েছে ৬০টি স্টেশনে, কমেছে ২১টি স্টেশনে। ২৬টি স্টেশনে পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে।
কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার, ডালিয়ায় তিস্তার পানি ৩০ সেন্টিমিটার, চকরহিমপুরে করতোয়ার পানি ৭ সেন্টিমিটার ও যমুনা নদীর পারি সারিয়াকান্দিতে ১৮ ও সিরাজগঞ্জে ১৯ মিলিমিটার উপর দিয়ে বইছে।
এছাড়া সিংড়ায় গুরের পানি ৩২, বাঘাবাড়িতে আত্রাইয়ের পানি ১৩১, এলাসিনে ধলেশ্বরীর পানি ৫৭, লক্ষ্যার পানি লাখপুরে ৪১ ও নারায়ণগঞ্জে ৪ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পদ্মার পানি গোয়ালন্দে ২৬, ভাগ্যকূলে ৮, সুরেশ্বরে ১০, ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষের পানি ২৫, সুরমার পানি কানাইঘাটে ১৫৫ ও সিলেটে ৩১, সুনামগঞ্জে ৬২ সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে।

কুশিয়ারার পানি অমলশীদে ৪৮, শেওলায় ৪৪, সারিঘাটে সারিগোয়াইন নদীর পানি ৬৪, বালায় খোয়াই নদীর পানি ১৩, দেরাইয়ে পুরাতন সুরমার পানি ৩৯, জারিয়াজঞ্জাইলে কংস নদীর পানি ১০৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাসের পানি ২৪ ও নারায়ণহাটে হালদা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.