উদ্বোধনের অপেক্ষায় চন্দনাইশ ফায়ার ষ্টেশন
মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ :: উপজেলার ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণ কাজ দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছরে সম্পন্ন হয়ে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের আড়াই লক্ষাধিক জনগণের জন্য সরকার গত ২০১১ সালের ২৩ মে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, প্রাক্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ আহমদ বীর বিক্রম। উদ্বোধনের দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর অবশেষে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে।
ছোটোখাটো কিছু কাজ বাকি থাকলেও সংশ্লিষ্টদের মতে অল্প সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে ভবন বুঝিয়ে দেয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চন্দনাইশ উদ্বোধনের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বর্তমান মহাজোট সরকার সাধারণ জনগণের জান-মাল নিরাপত্তার লক্ষ্যে সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা, উপজেলা সদরে ৭৮টি ফায়ার ষ্টেশন স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় চন্দনাইশে এ ফায়ার ষ্টেশনটি নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ২০১১ সালে।
পার্শ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও দীর্ঘ সময় ধরে চন্দনাইশের ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় জনগণের জন্য ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। ফলে, এ দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছরে চন্দনাইশ সহ আশেপাশের এলাকায় অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।
চন্দনাইশের আড়ালিয়া মৌজার পূর্ব জোয়ারা গ্রাম সংলগ্ন শহীদ মুরিদুল আলম (গাছবাড়ীয়া-বরকল) সড়কের পাশে ৩৩ শতক জমির উপর ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ শেষে ভিত্তির প্রস্থর স্থাপন করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, উদ্বোধনের পর থেকে সিডিউল অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে এ ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর সময় অতিবাহিত হওয়ার পর অবশেষে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে চলতি মাসে। অথচ গত মে’১২ সালে ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণ কাজ শেষে জনগণের সেবায় উন্মুক্ত করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল উদ্বোধনের সময়।
১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ফায়ার ষ্টেশনে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য সম্মুখ গেইটসহ ২টি গেইট, চারিদিকে বাউন্ডারী, ব্যারাক, তিনতল বিশিষ্ট ভবন, ১ হাজার বর্গফুটের পাম্প হাউজ, ৯৮০ বর্গফুটের ষ্টেশন মাষ্টারের বাসভবন, গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়। সেখানে পেট্রোল ষ্টোর, চিকেন কাম ডাইনিং আন্ডার গ্রাউন্ডে ৫০০ স্কয়ার ফুটের সীমানা প্রাচীর, গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়।
নির্মাণের পর ফায়ার ষ্টেশন পরিচালনার জন্য ১৬ জন ফায়ারম্যান, ৫ জন পরিচালক, ২ জন ফিডার, ১ জন স্পেশাল অফিসার, ১ জন স্টাফ অফিসার, ২টি গাড়ীর জন্য ২ জন ড্রাইভারসহ ব্যাপক জনবল রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু ভবন নির্মাণের পর অন্যান্য কাজগুলো করার কথা থাকলেও ঐসব কাজে এখনো হাত দেয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর দাবী অতি জরুরীভাবে জনগণের জানমাল আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন উদ্বোধনের মাধ্যমে এলাকার নিম্ন, মধ্যবিত্ত পরিবারের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এ বিশাল ফায়ার ষ্টেশন নির্মাণের জন্য এক বছরের সময় দেয়া হলেও নির্দিষ্ট সময়ের পর অতিরিক্ত আরো সাড়ে ৫ বছর সময় অতিবাহিত হয়।
এ ব্যাপারে যথাযথ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন জনগণের জান-মাল নিরাপত্তার স্বার্থে কাজটি জরুরীভাবে সম্পন্ন করার দাবী জানান সচেতন মহল।