‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ করবেন না খালেদা

0

সিটিনিউজবিডি : ক্ষমতায় গেলে ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের এক আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই- ভয়ের কিছু নেই। আপনাদের অভয় দিচ্ছি; আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। কারো প্রতি প্রতিশোধ নেব না।”

দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ওই আলোচনা সভা হয়।

নির্বাচন কমিশন বাতিল করে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দাবি জানান খালেদা।

তিনি বলেন, “আমরা শুধু চাই একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।”

একইসঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতির ডাকও দেন খালেদা জিয়া।

“সরকার আসবে, সরকার যাবে। এদেশে কিন্তু মাত্র দুটি দলই আছে- বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। কাজেই কোনো সময় আওয়ামী লীগ কোনো সময় বিএনপি, সেটারই রদবদল হতে থাকবে। আসুন উন্নয়নের রাজনীতি করি, জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি করি। গুম-খুন-হত্যা বন্ধ করে, মামলা-হামলা বন্ধ করে সামনের দিকে দেশটাকে এগিয়ে নিতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অস্থিরতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে আসেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। তিনি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন।

জিয়া সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতা দখলের পর ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি গঠিত হয়, যার প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ভোরে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

পরে সকাল সোয়া ১১টায় শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।

কোরআন তেলাওয়াত এবং এরপর জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট আরোপের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, “হঠাৎ করে কেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ভ্যাট বসানো হলো; টাকার অভাব। এতো চুরি করলে তো অভাব হবেই। চুরি করে ট্রেজারি খালি করে ফেলা হয়, দেশেও যদি টাকা না থাকে, তাতে টাকার অভাব হবেই। সেটা পূরণ করতে হবে দেশের মানুষের উপর করারোপ করে।”

ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এই শিক্ষার্থীরা চাকরি করে না, কোনো আয়-রোজগারও করে না; তাই আমি দাবি করবো অবিলম্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হউক।”

বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিরও কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এতো যে কুইক রেন্টাল পাওয়া প্ল্যান্ট ছিল, তারা সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি দিয়ে সেগুলো চালিয়েছে। আর মালিকরা লাভবান হয়েছে। এতে সরকারেরই ক্ষতি হয়েছে। এখন সেই টাকা উঠাবার জন্য সরকার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে।”

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলেই আমরা নিশ্চিত এই শূন্যতার অবসান ঘটবে। সেই সময় বেশি দূরে নয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, “অনির্বাচিত সরকার দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে দুর্বল করে দিচ্ছে। তারা বিরোধী দলকে কোনো কর্মসূচি করতে দেয় না। গণতান্ত্রিক শক্তি দুর্বল হলে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটবে।”

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জমির উদ্দিন সরকার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন বক্তব্য রাখেন।

উপস্থিত ছিলেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, আবদুল মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল হালিম, জয়নাল আবেদীন, আফরোজা আব্বাস, সানাউল্লাহ মিয়া, ফজলুল হক মিলন, গিয়াস কাদের চৌধুরী, খায়রুল কবীর খোকন, আবদুস সালাম আজাদসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.