কমলাপুরে টিকিটের জন্য উপচে পড়া ভিড়

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির চতুর্থ দিনেও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় করছেন হাজারো টিকিটপ্রত্যাশীরা। আজ সোমবার সকাল আটটা থেকে দেওয়া হচ্ছে ১৩ জুনের টিকিট। এছাড়া মঙ্গলবার ১৪ এবং বুধবার ১৫ জুনের আগাম টিকিট দেওয়া হবে।

ঈদযাত্রায় ট্রেনের আগাম টিকিট পেতে গতকাল বিকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিড় করতে থাকেন টিকেট প্রত্যাশীরা। সোমকার সকাল আটটায় টিকিট বিক্রি শুরু হলেও রবিবার বিকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন অনেক টিকিটপ্রত্যাশী। ভোর হতে না হতেই সেই লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। সকাল ছয়টার দিকে লাইনে মানুষের সংখ্যা নির্ধারিত টিকিটের তুলনায় প্রায় ২-৩ গুণ বেড়ে যায়। ফলে কমলাপুরে ট্রেনের টিকিটের জন্য যাত্রীদের মাঝে চলছে হাহাকার।

কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। কাউন্টারের সামনে বসেই অনেকে সেহরি খেয়েছেন। টিকিট পাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মধ্যরাতে এসেও যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাদের অনেকেও কাঙ্ক্ষিত টিকিট পাচ্ছেন। সকালের দিকে আসা অধিকাংশ লোকই টিকিট পাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

আসিফা পারভিন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। রাজশাহীতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে যাওয়ার জন্য টিকিট কিনতে এসেছেন তিনি। মহাসড়কে যানজট আর সংস্কার হওয়ায় ট্রেনে করেই রাজশাহী যাওয়ার টিকিট নিতে এসেছেন তিনি। টিকিট নামের সোনার হরিণ কি না এমন প্রশ্ন বারবার মনে দোলা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রায় ১৯ ঘন্টা পর তিনি কাঙ্খিত টিকিট হাতে পান।

আসিফা  বলেন, ‘টিকিটের জন্য গতকাল বিকাল থেকে দাঁড়িয়েছিলাম। যাক এখন নিশ্চিত বাড়ি যেতে আর ঝামেলা পোহাতে হবে না। টিকিট হাতে পাওয়ার পর আর কষ্ট মনে নেই। টিকিট হাতে পেয়ে প্রচণ্ড আনন্দ লাগছে।’

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে খুলনায় যাবেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সিনথিয়া। সেজন্য ট্রেনের টিকিট কাটতে রবিবার দুপুর দুইটা থেকে টিকেটের জন্য কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন। স্টেশনেই ইফতার ও সেহরি খেয়েছেন। সোমবার সাড়ে নয়টার দিকে তিনিও পেয়েছেন তার কাঙ্খিত টিকিট।

প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সিনথিয়া বলেন, অনেক অপেক্ষার পর টিকিট হাতে পেয়েছি। এখন আর কোনো কষ্ট মনে হচ্ছে না। অনেক ভালো লাগছে এই ভেবে যে, গ্রামে পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারব।

এদিকে কালোবাজারে টিকেট বিক্রি বন্ধ করতে পুরো স্টেশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সিসি টিভিতে নজর রাখা হয়েছে যাত্রীদের ওপর। এছাড়াও দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যরা।

রেলসূত্রে জানা যায়, রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের বিশেষ নির্দেশনায় এবার ঢাকা-কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনকে ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-খুলনা রুটে ব্যবহার করা হচ্ছে। আজ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। ১৭৫টি অতিরিক্ত যাত্রীবাহী বগিসহ ১৮টি ঈদ স্পেশাল ট্রেন এবারের ঈদে চালানো হবে। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল চালু হওয়া ঢাকা-কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতি ঈদে তিন দিন বন্ধ রাখা হয়।

কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী  বলেন, অগ্রিম টিকিট বিক্রয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো ত্রুটি নেই। অত্যন্ত শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। টিকিট নিতে আসা যাত্রীদের একটা কথা মনে রাখতে হবে, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সীমিত টিকিট বিক্রি করছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.