আকাশে মেঘ হলেও উধাও হয় বাঁশখালীর বিদ্যুৎ

0

সিটি নিউজ, বাঁশখালী প্রতিনিধি: বাঁশখালী জুড়ে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপযর্স্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।ফলে এবার ঈদে বাড়িতে আসা লোকজনের অন্তহীন ভোগান্তিতে নাবিশ্বাস উঠেছে সাধারন জনগনের।বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাা দেখার জন্য লোকজন মরিয়া হয়ে পড়লে ও নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় বাধ্য হয়ে জেনারেটর ভাড়া করে খেলা দেখতে হচ্ছে অধিকাংশ স্থানে ।

যেখানে চট্রগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় যখন শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে তখন আলোচিত বাঁশখালীবাসী নিয়মিত বিদ্যুৎ পেতে কাতর হয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্না দিচ্ছে।অথচ বাঁশখালীর গন্ডামারায় বাংলাদেশ সরকার দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগ্রুপ এস আলম ও চীন সরকারের সহযোগিতায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

বাঁশখালীর উপজেলা সদরের আনসুর আলী,পাইরাং এর কাসেম,শীলকুপের রানা,বৈলছড়ির কালু জানান পল্লী বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং জনগন হাপিয়ে উঠলেও কর্তৃপক্ষের যেন   গা ছাড়া ভাব।বাঁশখালীতে বর্তমানে প্রায় ৬২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎতের এসব অভিযোগ কর্তৃপক্ষ কে অবহিত করার পর ও বিকল্প কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেনা।

মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এর সাথে যদি সামান্য ঝড়বৃষ্টির একটু বাতাস হয় তবে বিদ্যুৎ অফিসের আর কোন দেখা মিলে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত বিদ্যুৎ আর আসে না। বিদ্যুৎ আসলেও শুরু হয় নানা বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি। এক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আসতে না আসতেই বন্ধ হয়ে যায় অন্য এলাকার সরবরাহ।

এত ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে লাইট, টিভি, ফ্রিজ ও বিভিন্ন গুরুপ্তপূর্ণ ইলেক্ট্রনিক্স জিনিষ নষ্ট হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে গ্রাহকদের।অপরদিকে কভারবিহীন তারে প্রতিনিয়ন সংগঠিত হচ্ছে মৃত্যু থেকে শুরু করে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ।সেক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ না জানার ভান করে দায় সারলেও তাদের নানা ভোগান্তি ও অনিয়মে অতিষ্ট জনগন নানা ধরনের কর্মসুচী পালন থেকে শুরু করে অফিস ঘেরাও করতে পারে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে ।

পল্লী বিদ্যুৎ বাঁঁশখালী জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজার। তৎমধ্যে আবাসিক গ্রাহক ৫২ হাজার, বাণিজ্যিক ৫ হাজার, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ১ হাজার, বিভিন্ন ধর্মীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ ৪ শতাধিক ও সেচ সংযোগ রয়েছে ৪৮৩ টি। বাকীগুলো নতুনসংযোগ।

এছাড়া রয়েছে পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক বাতি। ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র ১টি (২০এমভিএ)।বর্তমানে বাঁশখালীতে উপজেলা ও পৌরসদর জলদী, কালীপুর গুনাগরী, বৈলছড়ীও নাপোড়ায় ৪টি সাব স্টেশন করা হলেও তার মধ্যে নাপোড়া ছাড়া বাকী ৩ টি চালু আছে।

জানা যায়, বাঁশখালীর সাব স্টেশন গুলোতে সর্বোচ্চ লোড ১৭.৫০ মেগাওয়াট। ১৪ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সহ ৩৯৭ বর্গ কিলোমটার আয়তনের এ উপজেলার প্রায় ১৫০ টিরও অধিক গ্রামে বিদ্যুতায় করা হলেও এসব গ্রাহক দৈনিক কয়েক ঘন্টাও বিদ্যুৎ পায়না।

এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন ধরনের অভিযোগ নিয়ে গেলে মামলা থেকে শুরু করে নানা হুমকির কারনে জনগন এসব অভিযোগ থেকে বিরত থাকে। আগের ৬২ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের পাশাপাশি চলতি বছরে জানুয়ারি, ফেব্রয়ারী মার্চ ও এপ্রিল মাসে প্রায় ৬ হাজার মত নতুন মিটার সংযোগ দেওয়া হয়েছে।এখনও প্রতিনিয়ন নতুন নতুন জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ অভ্যাহত থাকলেও শতভাগ বিদ্যুাতয় সময়ের ব্যাপার বলে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ।

বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে এবং বিভিন্ন অনিয়ম ব্যাপারে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি –১ বাঁঁশখালী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ নাইমুল ইসলাম জানান, বাঁশখালীতে বিদ্যুতের চাহিদা দৈনিক ১৯ মেগাওয়াট ।

১৯ মেঘাওয়াটই পাওয়া যায়। লাইনের সমস্যার কারনে ক্যাপাসিটি নিতে পারে না। মেইন লাইনে সমস্যার কারনে ২/৩ঘন্টা বিদ্যুৎ দিতে দেরী হয়। কারণ প্রায় ৩৩ কেভির লাইন দীর্ঘ ৪৫ কি.মি. লম্বা। পুরোটাই চেক করতে সময়ের প্রয়োজন হয়।  আগামী ডিসেম্বরের দিকে বাঁশখালীর বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি জানান ।

জানা যায়, উপজেলা সদরের জোনাল অফিস ও সাব স্টেশন সহ ৫ টি অফিসে মিলে মাত্র ৬০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী আছে । লাইনম্যান আছে মাত্র ২২ জন, স্বাভাবিত ভাবে কাজ করতে গেলে আরো ৮ থেকে ১০ জন লাইনম্যান প্রয়োজন। ইলেকট্রেশিয়ান রয়েছে মাত্র ২৪ জন। জনবল ঘাটতি অজুহাতে যথাসময়ে বিদ্যুৎ বঞ্চিত হচ্ছে জনগন ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.