পারকি সৈকতে বেপরোয়া মোটর সাইকেল,ঘটছে দুর্ঘটনা

0

জাহেদুল হক,আনোয়ারা : আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের এসব গাড়ি যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। অন্যদিকে আইন-কানুন না মেনে সৈকতে চলছে বেপরোয়া মোটর সাইকেল। যার ফলে সাধারণ পর্যটকের ভোগান্তির পাশাপাশি নিত্য ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। আর এ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বেশিরভাগ নারী ও শিশু পর্যটক। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পর্যটকদের সঙ্গে মোটর সাইকেল চালকদের ঝগড়াঝাটি হাতাহাতিতে গড়ায়।

জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে সৈকতে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট মোটর সাইকেল ভাড়া দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। শখের বশে পর্যটকরা ঘন্টায় একশ টাকা ভাড়ায় নিয়ে এসব মোটর সাইকেল চালান সৈকত এলাকায়। পঞ্চাশেরও বেশি মোটর সাইকেল সৈকতে দাপিয়ে বেড়ালেও কারো যেন মাথাব্যাথা নেই। পারকি সমুদ্র সৈকত ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো.জামাল উদ্দিন জানান,ঈদের দিন থেকে এ পর্যন্ত সৈকত এলাকায় ৫টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন পর্যটক আহতও হয়েছেন। তবে অপরিকল্পিত সৈকত ব্যবস্থাপনা,পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা না থাকা ও পুলিশের চাঁদাবাজির কারণেই অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।

এমনিতেই সৈকতে নেই পর্যাপ্ত গণশৌচাগার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা,হোটেল-মোটেল তো দূরের কথা। তারমধ্যে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা,মাদকের ছড়াছড়ি ও তল্লাশির নামে পুলিশি হয়রানি পর্যটকদের ভাবিয়ে তুলেছে। এই দুর্ভোগের পাশাপাশি সৈকতে মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মোটর সাইকেল। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সৈকতে অনেকটা বেপরোয়া গতিতে চলছেন মোটর সাইকেল চালকরা। এ ক্ষেত্রে সচেতন মহলের বাধা তো দূরের কথা পুলিশ প্রশাসনের সিগন্যালও মানেন না তারা। সৈকতে মোটর সাইকেল চালানো যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে বিরক্তকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা।

চট্টগ্রাম সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ জানান,এবারের ঈদের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক পারকি সৈকতে এসেছে। কিন্তু সৈকতে বিকট শব্দে হর্ন বাজিয়ে আঁকা-বাঁকা করে দ্রুত মোটর সাইকেল চালানোর কারণে পর্যটকদের চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু তাই নয়,সৈকতে মোটর সাইকেল চলাচল করায় প্রায়ই প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চাঁদাবাজির কারণেই তাদের দমানো যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে পারকি সৈকত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে পর্যটকরা।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছৈয়দুল মোস্তফা বলেন,সৈকতের প্রবেশদ্বার হিসেবে কয়েকটি সড়ক রয়েছে। কোন নিয়ম না মেনে সৈকত এলাকায় মোটর সাইকেল নিয়ে ইচ্ছেমতো চলছে। এক্ষেত্রে নিজেরা সচেতন না হলে পুলিশের একার পক্ষে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সৈকতে বেপরোয়া গাড়ি চালনার দায়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি মোটর সাইকেল ধরা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে আইন না মানার প্রবণতা বেশি। এজন্য সকলকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গৌতম বাড়ৈ জানান,সৈকতে মোটর সাইকেল চালানো বন্ধ করতে নজরদারি বাড়ানোর জন্য কর্ণফুলী থানার ওসিকে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শিগগির সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.