সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে তিনটি সংস্কার চাইলেন গভর্নর
অর্থ ও বাণিজ্য :: ব্যাংকে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে তিনটি সংস্কার চাইলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে একথা বলেন তিনি।
ফজলে কবির বলেন, অনুকূল পরিস্থিতি টেকসই করতে আবশ্যিক এই তিন সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন না করা গেলে আর্থিক বাজারে আমানত ও ঋণের সুদহারে চাহিদা এবং জোগান ভিত্তিক পরিবর্তনশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, তিন সংস্কার না হলে মধ্যম আয় ও উন্নত অর্থনীতি পর্যায়ে দেশের প্রত্যাশিত উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আহরণ প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বান্ধব হওয়ার পরিবর্তে প্রবৃদ্ধি প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আবশ্যিক জরুরি সংস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে, খেলাপি ঋণজনিত ব্যয়ভারসহ ব্যাংকের সামগ্রিক পরিচালনা ব্যয় দ্রুত কমানোর মাধ্যমে আমানত এবং ঋণের সুদহারের ব্যবধান কমিয়ে আনা।
দ্বিতীয়ত, সরকারি সঞ্চয়পত্রের মুনাফা হার কমাতে হবে এবং মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের বাজার ইল্ড হার-এদুয়ের মধ্যে পার্থক্য যৌক্তিকীকরণ। তৃতীয়, সামগ্রিকভাবে মূল্যষ্ফীতি নিম্নামাত্রায় রাখার পরিবেশ সৃষ্টিকরতে হবে।
গভর্নর বলেন, সুদ হার কমানোকে কেন্দ্র করে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সরকারি সংস্থাসমূহের আমানতের সুদহারও রয়েছে নিম্ন মাত্রায়।
উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধিধারা ধরে রাখার স্বার্থে ব্যাংকগুলো স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে ঋণের গড় সুদহার এক অংকে রাখার সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে ঋণ প্রবাহের পর্যাপ্ততার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড় নজরদারী বজায় রেখেছে।
নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি আগের মেয়াদের মুদ্রানীতির মতোই ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ রাখার কথা উল্লেখ করেন গভর্নর। মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
ফজলে কবীর বলেন, সঞ্চয়পত্রে সুদ হার বেশি থাকার কারণে বেসরকারি ব্যাংকে আমানতে প্রবৃদ্ধি হার মন্থর হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা নিরসনে তিনি গত ১৫ এপ্রিল ব্যাংকগুলোর বিধিবদ্ধ জমার অনুপাত বা সিআরআর ১ শতাংশ কমিয়ে ৫.৫০ শতাংশ করেছেন।
একইভাবে রেপো সুদ হার ০.৭৫ শতাংশ কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। গভর্নর বলেন, আগের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ, তা অর্জিত হয়নি। এ বছরের জুনে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।